বালি ডার্ট চিপ সলো ব্যাকপ্যাকিং গাইড

বালি ডার্ট চিপ সলো ব্যাকপ্যাকিং গাইড

Sharing is caring!

বালি ইন্দোনেশিয়ার একটা দ্বীপ আর সাউথ ইষ্ট এশিয়ার সবচে পপুলার ট্যুরিস্ট ডেস্টিনেশনের একটি। যেনে রাখা ভাল ইন্দোনেশিয়াতে ১৭,৫০০ টি দ্বীপ আছে যার মধ্যে ৮,৮০০ টার নাম আছে বাকিগুলার নাই। ৯০০ এর বেশি দ্বীপে মানুষের বসবাস নাই। জাভা আর লম্বুকের মাঝ খানে বালি অবস্থিত। বালির আর লম্বুকের মাঝে নুসা আর গিলি নামে ৬ টা ছোট দ্বীপ আছে যেগুলো খুব সুন্দর আর পপুলার ট্যুরিস্ট ডেস্টিনেশন।

সাদা বালির বিচ, পাহাড়, রাইস ট্যারেস, ভলক্যানো, পুরাতন সব মন্দির সবমিলে সহজেই পৃথিবীর বুকে স্বর্গ বলা চলে বালিকে । বালির মত ভার্সেটাইল ট্যুরিস্ট ডেস্টিনেশন মনে হয় খুব কম ই আছে। ছোট একটা আইল্যান্ড অথচ এত দর্শনীয় স্থান কল্পনা করা যায়না। যেখানে সাউথ বালিতে রৌদ্রের তেজে গা পুড়ে যায় মাত্র ৫০-৬০ কি.মি দুরে নর্থ বালিতেই কনকনে ঠান্ডায় সোয়েটার পড়তে হয়। একদিকে যেমন সমতল আরেকদিক উঁচু উঁচু পাহাড়ে ঘেরা। আর ইন্দোনেশিয়া মুসলিম দেশ হলেও বালি পুরোটা হিন্দু অধ্যুষিত। সাউথ বালিতে খুব কম মুসলমান পাবেন। আর বালির হিন্দু কালচার আমাদের এখান থেকে অনেক ভিন্ন।

Contents

কখন যাবেন?

বালিতে আপনি বছরের যে কোন সময় যেতে পারেন। বালিতে দুইটা সিজন বলা চলে গ্রীষ্ম  আর বর্ষা। এপ্রিল থেকে অক্টোবর হল গ্রীষ্ম বা শুকনা মৌসুম।  আর নভেম্বর থেকে মার্চ বর্ষা বা ভেজা মৌসুম, এসময় বৃষ্টি হয় মূলত। বালিতে যদি ঘুরতে চান তবে ড্রাই সিজনে ঘুরতে আসা বেষ্ট হবে। এপ্রিল থেকে অক্টোবরের মাঝে।  এখন এপ্রিল-অক্টোবরের মধ্যে পিক ট্যুরিস্ট সিজন হল জুলাই আগস্ট। তাই ক্রাউড এভোয়েড করতে চাইলে আর কিছুটা পিক সিজনের মজা নিতে চাইলে জুনে অথবা সেপ্টেম্বর এ আসা ভাল। এই দুমাস বাদ দিলে আপনি সবকিছু একটু কম দামে পাবেন আর বেশি বার্গেইন করার সুযোগ পাবেন। তাছাড়া হোটেল বুকিং নিয়ে ভাবতে হবে না দিনে দিনে সব জায়গাতে হোটেল পাবেন। এছাড়া ডিসেম্বর মাস ও বাদ দেয়া উচিৎ, ক্রিসমাস আর নিউ-ইয়ারের জন্য এ সময় টা বেশ চাপ থাকে। আমার মতে বেস্ট মাস হল জুন। যদি ট্রিপ ছোট হয় তবে জুনের শেষ সপ্তাহে যাওয়া বেটার।

 

কিভাবে যাবেন?

ঢাকা থেকে বালি ডিরেক্ট ফ্লাইট নেই। মালেশিয়া অথবা সিঙ্গাপুরে ট্রানজিট পড়ে। ট্রানজিট পড়ে তার মানে এই না আপনার কোন ভিসা লাগবে। ট্রানজিট এরিয়াতে অপেক্ষা করা ছাড়া কোন কাজ নাই। যাবার সময় সিঙ্গাপুর আর ফেরার সময় মালেশিয়া ট্রানজিট নিলে দুটা সুন্দর এয়ারপোর্ট ও সাথে দেখা হয়ে যাবে।

 

 

এয়ার টিকেট

টিকেটের দাম একমাস আগে কাটলে ২৮ হাজারে পেয়ে যেতে পারেন আবার ৭ দিন আগে কাটলে সেটাই ৩৮ থেকে ৪০-৪৫ হয়ে যায়। যত আগে কাটবেন তত কমে পাবেন।

আমি টিকেট যাবার কেটেছিলাম ১০ দিন আগে আর বালিতে ১৪ দিন ছিলাম সেখান থেকে মালেশিয়াতে ১৬ দিন মত তারপর ফিরেছি। সেভাবে টিকেট কাটতে গিয়ে আমার টোটাল ফেয়ার পড়েছিল ২৭৯৭২ টাকা। রুট ছিলঃ ঢাকা-সিঙ্গাপুর-বালি-মালেশিয়া-ঢাকা। আমি যাবার সময় স্কুট এয়ারলাইনে টিকেট কেটেছিলাম, ফেরার গুলো এয়ার এশিয়ার। আমি সরাসরি এয়ারলাইনের ওয়েবসাইট থেকে ইবিএল একুয়া কার্ড দিয়ে টিকেট কেটেছিলাম। প্রথমে Sky Scanner এ সার্চ দিয়ে দেখে নিবেন কোন এয়ারলাইনে সস্তায় টিকেট পাওয়া যাচ্ছে তারপর সেই এয়ারলাইনের ওয়েবসাইট এ গিয়ে টিকেট কাটবেন।

বাজেট প্রব্লেম না হলে মালিন্দ আমার কাছে ভাল মনে হয়েছে। যাবার টা স্কুট আর ফেরার টা মালিন্দ তে কাটলে বেস্ট হয়। আমি ফিরতি টিকেট এয়ার এশিয়া আর মালিন্দ একি দামে পেয়েছিলাম, কিন্তু তাড়াহুড়ার কারণে এয়ার এশিয়া কেটে ফেলি ভুলে। তাই সবগুলো অপশন ট্রাই করা উচিত । তাহলে সহজে বেস্ট ডিল পাবেন।

 

ভিসা

বালিতে বাংলাদেশীদের ভিসা এক্সেমশন ৩০ দিনের জন্য অর্থাৎ কোন ভিসা লাগেনা। এখন অনেকে ভিসা অন এরাইভাল বলে, যা ভুল। এই দুটার মধ্যে পার্থক্য আছে। ভিসা এক্সেমশন হলে আপনাকে শুধু ইমিগ্রেশন লাইনে দাড়িয়ে পাসপোর্ট এরাইভাল সিল নিয়ে আপনার কাজ শেষ, কোন ভিসা ফি, ছবি বা ফর্ম পুরন করা লাগবে না। অপরদিকে ভিসা অন এরাইভালে আপনাকে ফর্ম পুরন করতে হবে,ছবি, ভিসা ফি এসব জমা দিয়ে ভিসা নিতে হবে। নেপাল বা ভুটান কখনো গেলে আরও ভাল বুঝতে পারবেন।

আপনার হোটেল বুকিং আর রিটার্ন এয়ার টিকেটের আইটিনারির প্রিন্ট কপি ইমিগ্রেশনে দেখাতে হবে। যেহেতু ভিসা এক্সেমশন তাই কোন ভিসা ফি বা ছবি কিছুই লাগেনা।  আমার কাছে ইমিগ্রেশন ডলার দেখতে চাওয়া বা আর কোন কিছু দেখতে চায়নি। শুধু কতদিন থাকবো জিজ্ঞেস করে এরাইভাল সিল মেরে পাসপোর্ট হাতে দিয়ে দিল। এভাবে আপনি ৩০ দিন থাকতে পারবেন, কোনভাবেই এর মেয়াদ বাড়ানো সম্ভব না। ইমিগ্রেশনে কুল থাকার চেষ্টা করবেন, মুখে হাসি নিয়ে ফ্রেন্ডলি ভাবে কথা বলবেন কোন সমস্যা হবেনা। স্যুটেড বুটেড হয়ে না গিয়ে সিম্পল শর্টস টিশার্ট পড়ে গেলে বেশি বেটার। স্যুট টাই পড়ে বা ফরমাল শার্ট ইন করে ইমিগ্রেশনে যাওয়া ব্যাপারটা বালির সাথে যায় না।

 

বালিতে কোথায় ঘুরবেন আর কি কি দেখবেন?

সত্যি বলতে বালি ৭ দিনের ট্যুর না। তারপরেও অনেকে ৩-৭ দিনের ট্যুর বেশি দেয়। বালি যদি কখনো আসেন সময় করে ২ সপ্তাহ সময় নিয়ে আসবেন। শুধু বালির সব দেখতে ২ মাস লাগবে। আশেপাশের গিলি, লম্বুক এসবের কথা বাদ দিলাম। তারপরেও অনেকে সুপারম্যানের মত ৭ দিনে বালি লম্বুক গিলি নুসা পেনিদা সব ঘুরে ফেলে। সোজা উদাহরণ দিয়ে যদি বোঝাই তাহলে। বালি হল মাল্টি লেয়ারের চকলেট, আপনাকে ধৈর্য্য ধরে চুষে খেতে হবে, তাহলে প্রতিটা লেয়ারের টেস্ট বুঝতে পারবেন আর এতে সময় লাগবে। এখন আপনি একটু চুষে তারপর কামড়িয়ে যদি খান তবে একটা লেয়ারের টেস্ট পাবেন। এখন আপনি কি কি কতটা সময় নিয়ে দেখবেন আপনার উপর নির্ভর করছে। আমি নিচে বালির দর্শনীয় কিছু জায়গা সম্পর্কে ধারণা দিব সংক্ষেপে।

 

সাউথ বালি

শুরু টা সাউথ বালি দিয়ে করি কারণ সাউথ বালি হল সবার ট্যুরের স্টার্টিং পয়েন্ট। আর বালির ৭০% এর বেশি ট্যুরিস্ট সাউথ বালিতেই থাকে বলা যায়। তাই সাউথ বালি থেকে যত দুরে যাবেন তত কম ট্যুরিস্ট দেখবেন আর তত লোকাল মানুষ বেশি দেখবেন। পাশাপাশি বালির কালচার আর লোকাল লাইফ দেখতে পারবেন। আমার কাছে সাউথ বালি সময় নষ্ট করা ছাড়া কিছু মনে হয়নি। বালির অন্যান্য দিক অনেক বেশি সুন্দর।

Ngurah Rai International Airport- DPS

উরাহ্ রাই ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট ( Ngurah Rai International Airport- DPS) : বালির একমাত্র এয়ারপোর্ট, এটা দেনপাসার শহরে পড়ে। উচ্চারণ টা কঠিন, Ng টা সাইলেন্ট থাকে। এখান থেকে সবচেয়ে কাছের শহর হল কুটা।

কুটাঃ কুটা বালির সবচেয়ে ডেভেলপড শহর। এয়ারপোর্ট কাছে হওয়াতে সবাই এখানে এসে উঠে। আর বালির গতানুগতিক সব ট্যুরিস্ট স্পট গুলোর মাঝখানে পড়ে। এখানে হোটেল মোটামুটি সস্তা আর এখানে থেকেই মোটামুটি সাউথ বালি পুরোটা এক্সপ্লোর করা যাবে। যারা ৩-৪ দিনের জন্য বালি ঘুরতে আসেন তাদের এখানে থাকাই বেটার হবে। আর কুটার বাইরে বালির নাইট লাইফ নাই। অন্যান্য শহরগুলো রাত ৮-৯ টার পর সব ফাঁকা হয়ে যায়, দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। বালির সবচেয়ে হ্যাপেনিং প্লেস বলা যায়।

https://www.booking.com/searchresults.en.html?city=-2683839&aid=1543069&no_rooms=1&group_adults=1&room1=A

 

কুটা বিচঃ কুটা বিচ সার্ফিং এর জন্য বেস্ট। অনেকে এসে ৩-৪ দিনের জন্য সার্ফিং বোর্ড ভাড়া নিয়ে এখানে সার্ফিং করে। ইন্সট্রাক্টর সহ সার্ফিং করতে পারেন এখানে।

উলুয়াটু টেম্পল

উলুয়াটু টেম্পলঃ ক্লিফের উপর বিশাল হিন্দু টেম্পল। সানসেট দেখার জন্য বেশ ভাল। চারপাশ টা বেশ সুন্দর ৩-৪ ঘণ্টা আরামে কেটে যায়। সন্ধ্যার পর এখানে বালির বিখ্যাত কেচাক ড্যান্স দেখতে পারেন। এই টেম্পলে প্রাপ্তবয়স্কদের এন্ট্রি ফি হল ৩০ হাজার রুপি বা ১৮০ টাকা। আর এখানে বানর থেকে সাবধান, টুপি কেড়ে নিয়ে যাবে।

 

 

সেমিনিয়াকঃ বালির ভিলা আর লাক্সারি রিসোর্ট হোটেল গুলো এখানে। যারা হানিমুনে আসে তাদের জন্য বেস্ট।

 

জিম্বারান বিচঃ সানসেট দেখার জন্য বেস্ট + সি ফুড ডিনার। তবে সি ফুড ডিনারের ব্যাপারে একটু সাবধান, দাম জিজ্ঞেস করে নিবেন আগে। অনেক কস্টলি,  দেখাগেল না জেনেশুনে খেতে বসলেন বিল আসলো ৮-১০ কে।

 

নুসা দুয়াঃ ওয়াটারব্লো নামে একটা জায়গা আছে। সমুদ্রের ধারে পাহাড়ে বড় বড় ঢেউয়ের আছড়ে পড়া দেখতে যায় সবাই। সি-ওয়াক আর ওয়াটার এক্টিভিটির জন্য ভাল।

 

তানাহ লট টেম্পল

সানুর বিচঃ এখানে সি-ওয়াক+ ওয়াটার এক্টিভিটি করতে পারেন। আর নুসা পেনিদা যেতে হলে আপনাকে এখান থেকেই ফাস্ট বোট নিতে হবে।

তানাহ লট টেম্পলঃ এটা অনেকটা বলা যায় সমুদ্রের মাঝে টেম্পল। অনেক বেশি ক্রাউডেড আর ট্যুরিস্টি প্লেস। এন্ট্রি ফি ৬০ হাজার রুপি মানে ৩৬০ টাকা। আমার তেমন পছন্দ হয়নি, আর মন্দিরের ভেতরে ঢুকতে পারবেন না। আশপাশ ঘুরে চলে আসতে হবে।

 

সেন্ট্রাল বালি

বালির সবচেয়ে সুন্দর পার্ট হল সেন্ট্রাল বালি। কালচার, লোকাল লাইফ, পাহাড় সব সেন্ট্রাল বালির মধ্যে।

 

উবুদঃ উবুদ শহর হল রিল্যাক্স করার জায়গা। এখানে হোটেল ভাড়া অনেক কম। উবুদ অনেকটা বালির মাঝখানে। তাই এখানে থেকেই আপনি পুরা সেন্ট্রাল বালি এক্সপ্লোর করতে পারবেন। বালির গ্রাম বললে ভুল হবেনা।  ইয়োগা আর কুকিং ক্লাস করতে সব ইউরোপিয়ান রা এখানে থাকে। ক্রাফটের কাজ আর সুন্দর সব মন্দির এখানেই। গোয়া গাজাহ টেম্পল,  তেগেনুনগান ঝর্না, গুনুং কাওয়ি টেম্পল, টেগাল্লাল্যাং রাইস ট্যারেস

টেগাল্লাল্যাং রাইস ট্যারেস

উবুদ থেকে কিছুটা দুরেই জাতিলুয়িহ্ রাইস ট্যারেস। অনেকে এটাকে বালির সবচেয়ে সুন্দর রাইস ট্যারেস বলে। সময় কম থাকলে টেগাল্লাল্যাং রাইস ট্যারেস দেখলেও হয়।

 

বেদগুলঃ উবুদ থেকে ৫০ কি.মি মত দুরে হল বেদগুল শহর। বালির সেন্ট্রাল মাউন্টেন রেঞ্জ। একদম ঠান্ডায় কাঁপাকাঁপি অবস্থা। যদি এখানে যাবার ইচ্ছা থাকে তবে সাথে গরম কাপড় আনবেন। আমি আগে পড়াশোনা করে গিয়েছিলাম বলে সাথে গরম কাপড় নিয়েছিলাম।

বেদগুল এরিয়া তে গেলে আপনি অনেক মুসলমান পাবেন, বালিতে অনেকদিন পর বড় মসজিদ বেদগুলে দেখেছি আমি। বেদগুলে প্রথমেই যেটা পড়ে তা হল বেরাতান লেক। পাহাড়ে ঘেষা অপরুপ সুন্দর জায়গা। বেশিরভাগ সময় পাহাড়ের চুড়া মেঘে ঢেকে যায়। চোখ জুড়িয়ে যাবে দেখে। আর লেকের পাশেই বালি সবচেয়ে সুন্দর মন্দির। পুরা উলুন দানু বেরাতান টেম্পল। লেকের উপর অনেক সুন্দর সাজানো গোছানো মন্দির।  আর চারপাশের আবহাওয়াতে এক অদ্ভুত মুগ্ধতা আছে যা নিজে অনুভব না করলে বোঝানো সম্ভব না।

পুরা উলুন দানু বেরাতান টেম্পল

এর পরে ৫ কি.মি গেলেই বুয়্যান লেক পড়ে, এখানেও লেকের পাশে একটা টেস্পল আছে।  নামটা হল পুরা উলুন দানু বুয়্যান টেম্পল। সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার হল এত সুন্দর একটা মন্দির পরিত্যক্ত! কাউকে দেখলাম না, আমি এক-ঝলক দেখে বের হয়ে এসেছি ঝটপট। ঠাণ্ডা কুয়াশচ্ছন্ন আবহাওয়া আর নির্জন মন্দির ভুতুড়ে পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল। গা কাটা দেবার মত অনেকটা।

এই মন্দির দেখার পর ১০ কি.মি মত গেলেই গিটগিট ওয়াটার ফল। গিটগিট আমার দেখা সবচেয়ে সুন্দর ওয়াটারফল। এখানে পার্কিং স্পট থেকে অনেকটা পথ হেঁটে নিচে নামতে হয়। যেতে আসতে একঘণ্টা মত সময় লাগবে। ঘন্টাখানেক নিচে বসে ঝর্ণা দেখতে পারেন। তিনঘণ্টা সময় নিয়ে গেলে সবথেকে ভাল হয়।

গিটগিট ওয়াটার ফল

গিটগিট ঝর্ণার ১০ কি.মি রেডিয়ামে আরও ৩ টা সুন্দর ঝর্ণা আছে। আলিং আলিং, বানয়ুমালা আর সেকুমপুল ফলস। আমার কাছে ঝর্না গুলোর চেয়ে সুন্দর মনে হয়েছে ঝর্নাগুলোতে যাবার রাস্তা। যদি সেকুমপুল যান তবে একটা পুরো দিন চলে যাবে। অনেকটা পথ ট্রেক করে যেতে হয় আর গাইড ছাড়া যেতে পারবেন না। গুগল ম্যাপ ধরে সোজা চলে যাবেন এন্ট্রি গেট থেকই গাইড নিতে পারবেন। বিভিন্ন প্যাকেজ আছে ৭০০-১৫০০ টাকা পর্যন্ত। আপনার যেটা সুবিধা হয় নিতে পারেন।

হান্দ্রা গলফ রিসোর্ট

হান্দ্রা গলফ রিসোর্টঃবালির সব জায়গাতে আপনি একধরনের গেট দেখতে পাবেন। যেটাকে বালিনিজ গেট বলে। হান্দ্রা গলফ রিসোর্টের বালিনিজ গেট টা অনেক বড় আর সুন্দর সাথে সহজেই এক্সেসিবল। আমি আগে জানতাম বালিতে সবচেয়ে সুন্দর বালিনিজ গেট এটাই পরে জানলাম এর চেয়ে অনেক সুন্দর একটা গেইট আছে, তবে সেটাতে সবাই যেতে পারবেনা। পরে কভার করছি সেটা। এই গেটের সাথে ছবি তুলতে আপনাকে সময় ভেদে লাইন দিতে হতে পারে। আর এখানে ছবি তুলতে আপনাকে ১০ মিনিট সময় দিবে তার জন্য এন্ট্রি ফি ৩০ হাজার রুপি বা ১৮০ টাকা।

মুন্দুকঃ সেন্ট্রাল বালির একটা শহর, এটা বেদগুলের পাশেই। মুন্দুক অনেকটা বাংলাদেশের বান্দরবনের মত। মুন্দুকের রাস্তায় বাইক চালানো ওয়ান্স ইন এ লাইফটাইম এক্সপেরিয়েন্স। আপনি মাথা থেকে বের করতে পারবেন না এই রাস্তা। মেঘের মধ্যে দিয়ে বাইক চালাবেন রীতিমত। আর মুন্দুকে থাকতে হলে গরম কাপড় লাগবে। সেকুমপুল,আলিং আলিং, গিটগিট, মুন্দুক ফলস, এই ঝর্ণা গুলো সব দেখতে হলে আপনার মুন্দুকে থাকা বেটার হবে। আমি সময়ের অভাবে আর মুন্দুকে থাকা উবুদের থেকে কস্টলি দেখে থাকিনাই। উবুদে থেকেই যতটা সম্ভব এক্সপ্লোর করেছি। মুন্দুক যাবার পথেই ডাবল লেক ভিও পয়েন্ট পড়ে। ডাবল লেক ভিউ পয়েন্ট এ যাবার সময় রাস্তার পাশে পাহাড়েড় রাস্তা ঘেঁষে অনেক কফি শপ আছে। জমে জাওয়া ঠান্ডায় পাহাড়ের ধারে বসে কফি খাওয়ার আমেজ ই আলাদা। যদি কোলাহল থেকে দুরে প্রকৃতির মাঝে থাকতে চান তবে মুন্দুকের চেয়ে বেস্ট কিছু নেই বালিতে।

 

নর্থ বালি

সেন্ট্রাল বালির পরেই নর্থ বালি শুরু। নর্থ পার্ট টা বালির পুরাতন ক্যাপিটাল ছিল ডাচ দের সময়ে। লোভিনা বিচ সবচেয়ে ফেমাস জায়গা। খুব বেশি কিছু নাই এদিকে। এখানে ডলফিন দেখার এক্টিভিটি আছে একটা, যার জন্য বেশিরভাগ ট্যুরিস্ট আসে। বেশকিছু ট্র্যাভেল ব্লগার এটাকে সাপোর্ট করেনা। ডলফিন দেখার এক্টিভিটি টা এতই পপুলার হয়েছে যে ডলফিনের চেয়ে নৌকা বেশি সেখানে। আর অনেকের মতে এটা ডলফিনদের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। আর এত ক্রাউডেড প্লেসে ডলফিন দেখে আপনি মজাও পাবেন  না। আমি অনেক রিভিউ দেখে পড়াশোনা করার পর যাইনি।

 

ইষ্ট বালিঃ ইষ্ট বালির সব দেখা হয়নি আমার, ইষ্ট বালিতে অনেক কিছু আছে দেখার মত। দুটা ভলক্যানো ই ইষ্ট বালিতে। মাউন্ট বাতুর আর মাউন্ট আগুং।

 

মাউন্ট বাতুরঃ মাউন্ট বাতুর ট্রেক বালির পপুলার একটা এক্টিভিটি। সানরাইজ দেখতে অনেকে যায় এখানে। একা একা যাওয়া যায় কিনা জানি না। আমি কুটা থেকেই ট্যুর প্যাকেজ কিনেছিলাম। ৪ লাখ রুপি মানে ২৪০০ টাকা মত। বেশি মানুষ থাকলে আরও কমে পসিবল। আমার সাথে যে ফরেনার গুলো ছিল তারা ৬-৭ লাখ রুপি মানে ৩৫০০-৪০০০ টাকা দিয়ে ট্যুর প্যাকেজ কিনেছে। তাই আপনি যত বার্গেনিং এ পটু তত বেটার ডিল পাবেন। এই খরচে আপনাকে হোটেল পিকআপ +ড্রপ, ব্রেকফাস্ট সাথে গাইড দেয়া হবে। কুটা থেকে পিক করা শুরু করে রাত ১.৩০ টা থেকে উবুদে ২-২.৩০ থেকে। তারপর সেখান থেকে ২ ঘণ্টা মত সময় লাগে যেতে।

মাউন্ট বাতুর

ভোর ৪ টা সময় ট্রেক শুরু হয়, সাধারণত ৬ টা তে সানরাইজ সো তার আগেই পৌছাতে হবে। যাদের হাইটো ফোবিয়া আছে তারা ইগনোর করবেন। আর উপরে অনেক ঠাণ্ডা তাই যদি যাবার ইচ্ছা থাকে তবে গরম কাপড়, উইন্ড ব্রেকার নিয়ে নিবেন সাথে। সানরাইজ দেখার পর উপরে ব্রেকফাস্ট আর ভলক্যানো স্টিম দেখাতে নিয়ে যাবে গাইড। ফেরার সময় কিন্তামানি গ্রাম আর লুয়াক কফি প্ল্যান্টেশন ঘুরাবে। তবে আগে থেকে এগুলো কথা বলে নিবেন, যে প্যাকেজের মধ্যে এসব ঘুরাবে কিনা। নইলে সোজা টান মেরে আপনাকে হোটেলে ড্রপ করবে। আর বালিতে গোল একধরনের হ্যান্ড ব্যাগ পাওয়া যায়, সেগুলো কম দামে নিতে চাইলে কিন্তামানি তে কিনতে পারেন। সব শেষ করে হোটেল ফিরতে দুপুর হয়ে যাবে। সারা রাত জেগে ট্রেক করে সেদিন আর তেমন এনার্জি পাবেন না। তাই সারাদিন ঘুমিয়ে কেটে যাবে।

 

পুরা লেমপুয়াং লুহুর টেম্পলঃ এই টেম্পলের নাম অনেকেই জানেনা। আমি ট্যুরের একদম শেষ মুহূর্তে জেনেছিলাম, কিন্তু সময়ের কারণে হয়নি যাওয়া। এখানে একটা বালিনিজ গেইট আছে যেটাকে স্বর্গের দরজা বলে লোকাল রা। মাউন্ট লেমপুয়াং এর উপরে অবস্থিত এই টেম্পল। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১১৭৫ মিটার উপরে এই মন্দির। একদম নিচ থেকে মন্দিরে যেতে আপনাকে ১৭০০ মত সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হবে। প্রায় দুই ঘণ্টা সময় আর যথেষ্ট ভাল ফিটনেস দরকার। আর লোকাল দের মতে এখানে উঠার সময় যারা অভিযোগ করে যে পারবোনা বা অনেক কঠিন তারা কখনো উপরে যেতে পারেনা। এটা মাউন্ট আগুং এর বেশ কাছেই। মন্দিরের উপর থেকে মাউন্ট আগুং দেখা যায় অনেক ভালভাবে। আর যেহেতু পাহাড়ের চুড়ায় টেম্পল তাই চারপাশ দেখে চোখ জুড়িয়ে যাবে। আর এত উঁচুতে তাই ঠাণ্ডা হবে নরমাল ব্যাপার। অনেকে এখানে সানরাইজ দেখতে আসে তাই সেটা করতে হলে আপনাকে মাউন্ট বাতুর ট্রেকের মত করে রওনা দিতে হবে। এখানে কোন প্যাকেট ট্যুর নাই, নিজে নিজেই যেতে হবে। এডভেঞ্চার পছন্দ করলে কখনোই মিস করবেন না।

 

ব্লু ল্যাগুন বিচ এবং বিয়াস তুগেল বিচঃ এটাও ইষ্ট বালিতে পড়ে। বালিতে আমার দেখা সবচে সুন্দর বিচ। এরকম নীল পানির বিচ নুসা পেনিদা ছাড়া পাবেন না। এই দুটা বিচ ই পাশাপাশি,  সারাদিন এদিকেই কাটিয়ে দেয়া যায়। আমি উবুদ থেকে ৩৫ কি.মি মত স্কুটার চালায়ে গিয়েছিলাম। এই দুই বিচের মাঝখানে “পাদাং বাই” জেটি। পাদাং বাই থেকে মূলত গিলি আর লম্বুকের ফাস্টবোট যায়। যারা গিলি, লম্বুক যেতে চায় তাদের এখানে আসতে হবে।

 

ইষ্টে আমেদ আর কান্ডিডডাসা নামে দুটা গ্রাম/শহর আছে। এখানকার বিচ গুলো অনেক পপুলার শুনেছি, আমার যাওয়া হয়নি। তবে অনেকেই এদিকটায় থাকে।

 

নুসা পেনিদা আইল্যান্ড

বালির সবচে সুন্দর জায়গা আমার কাছে। নুসা পেনিদার মত সুন্দর বিচ বালির কোথাও পাবেন না। নুসা পেনিদাতে অনেক জায়গা আছে দেখার মত।  মেইন এট্রাকশন কয়টা দেখতে চাইলে ২ দিনেই শেষ করা সম্ভব। তবে ৩-৪ দিন রিল্যাক্সে কাটালে বেস্ট হবে। নুসা পেনিদা যাবার জন্য আপনাকে প্রথমে সানুর বীচে যেতে হবে।  সেখান থেকে বিভিন্ন কোম্পানির ফাস্টবোট পাবেন। যাওয়া আসার টিকেটের দাম ৪ লাখ রুপি বা ২৪০০ টাকা, অর্থাৎ ওয়ান ওয়ে ২ লাখ বা ১২০০ টাকা মত পড়বে। বিচে গেলে অনেক দালাল জাপ্টে ধরবে, বেটার হয় সরাসরি ফাস্টবোটের কাউন্টারে গিয়ে টিকেট কাটা। টিকেটের দাম ফিক্সড, সো দালাল ধরে টিকেট কাটবেন না। সরাসরি নিজে গিয়ে কাটবেন।  সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত বিভিন্ন কোম্পানির বেশ অনেকগুলো ফাস্টবোট নুসা পেনিদা আর বালির মাঝে যাওয়া আসা করে। তাই ডে ট্রিপ দিতে চাইলে খুব সকালে গিয়ে প্রথম বোটে করে নুসা পেনিদা গিয়ে একদম বিকালের ফাস্টবোটে ফিরে আসতে পারবেন। যাওয়া আসার সময় টা কাউন্টারে ক্লিয়ার করে কথা বলে নিবেন।

বাম থেকে নুসা পেনিদা, ল্যাম্বোনগ্যান, নুসা সেনিগ্যান

নুসা পেনিদার দুই পাশ এক্সপ্লোর করতে দুদিন সময় লাগবে। রাস্তা প্রচণ্ড খারাপ তাই দ্রুত মুভ করাও পসিবল না। ১০-১৫ কি.মি/আওয়ার এভারেজ স্পিড বলা যায়। নর্থ সাইডে আছে গিরি পুত্রি কেভ টেম্পল, সেবেলে বিচ, আতুহ বিচ আর রাজালিমা। সাউথ পার্টে আছে সেগেনিং ওয়াটারফল, কেলিংকিং বিচ, এঞ্জেলস বিলাবং, ব্রোকেন বিচ, ক্রিস্টাল বে, গামুট বে এসব।

আতুহ বিচ

গিরি পুত্রি টেম্পল বিশাল একটা গুহার ভিতরে, গা ছম ছমে একটা পরিবেশ, আমার বেশ ভাল লেগছিল। এরপর কিছুদূর গেলেই সেবেলে বিচ দেড় ঘণ্টা মত ভাঙা রাস্তায় ড্রাইভ করে বিচে যেতে হয়। নরমালি কেউ সেবেলে বিচ যায় না খারাপ রাস্তার কারণে। আর অনেক নির্জন জায়গা, কোন সমস্যা হলে ভাল বিপদে পড়বেন। আমি একা একা গিয়ে বেঁচে ফিরেছিলাম।  তবে ভাল এডভেঞ্চেরাস জার্নি ছিল।

 

 

রাজালিমা

সেবেলে বিচ চাইলে বাদ দিতে পারেন, সেবেলে বিচের কিছুটা দুরেই আতুহ বিচ আর রাজালিমা। দুটা জায়গা পাশাপাশি মাঝখানে পাহাড় দিয়ে ভাগ করা। আতুহ বিচে অনেকে সানরাইজ দেখতে আসে। জেটি থেকে ৩৫ কি.মি রাস্তা ওয়াইল্ড এডভেঞ্চার যারা পছন্দ করে তাদের জন্য বেস্ট। আতুহ বিচ আমার কাছে বালির সবচেয়ে সুন্দর বিচ বলবো। সকালে গিয়ে সারাদিন এখানে কাটিয়ে দেয়া যায়।

 

এরপর দিন চলে যেতে পারেন সেগেনিং ওয়াটারফল। সেগেনিং ওয়াটারফল খুব ছোট একটা ফলস। অনেক কম মানুষ যায় সেখানে। ফলসের নিচে ন্যাচারাল বাথটাব টাইপের একটা জায়গা আছে।  পাহাড়ের গা ঘেঁসে নিচে নামতে হয় ১৫ মিনিট মত। যাদের হাইটোফোবিয়া আছে তারা ভুলেও পা মাড়াবেন না ওদিকে। অনেকটা খাড়া পাহাড়ের গায়ে বাঁশ আর গাছের ডালপালা দিয়ে রাস্তা বানানো। ন্যাচারাল বাথটাবে গা ভিজিয়ে পাহাড়ের গায়ে সমুদ্রের নীল পানি আছড়ে পড়া দেখতে দেখতে অনেকটা সময় এখানে কাটিয়ে দিতে পারবেন। আবার উঠতে হবে ২৫ মিনিট সময় নিয়ে।

কেলিংকিং বীচ

এরপর কেলিংকিং বীচ,  নুসা পেনিদার সবচেয়ে জনপ্রিয় জায়গা। অনেকে ডে ট্রিপে এখানে আসে। উপর থেকেই অনেক ভাল ভিউ পাওয়া যায়। এখানে নিচে বিচে নামতে ৪৫ মিনিট মত আর উঠতে ১ ঘণ্টা। যাদের ফিটনেস ভাল তারা আরও জলদি কমপ্লিট করতে পারবে। নীচে না নামলে অনেক কিছুই আসলে মিস করবেন। তবে  সবার পক্ষে নিচে নামা সম্ভব হয়না। তবে এখানে নিচে নামলে পানিতে নামার ক্ষেত্রে খুবই সাবধান। অনেক স্ট্রং ওয়েভ, একদম টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যায় পানিতে। তাই সাঁতার না জানলে এই বীচে পানির ধারে কাছে যাওয়া বিগ নো।

 

কেলিংকিং বীচ দেখা হয়ে গেলে ব্রোকেন বীচ আর এঞ্জেল’স বিলাবং যেতে পারেন। কেলিংকিং থেকে কিছুটা দুরেই এই জায়গাটা পড়ে। এঞ্জেল’স বিলাবং এ পাহাড়ের খাদে জমে থাকা সমুদ্রের নীল পানি আর ব্রোকেন বিচ গোল একটা বিশাল খাদের মাঝে সুন্দর বীচ। ব্রোকেন বীচে নিচে নামার পথ দেখিনাই। তবে এঞ্জেল’স বিলাবং এ নোনা পানিতে গোসল করতে পারবেন।

ব্রোকেন বীচ

নুসা পেনিদাতে অনেকে ডে ট্রিপ দেয়। ডে ট্রিপে সাধারণত সাউথ পার্ট টা দেখে। কেলিংকিং বিচ, এঞ্জেল’স বিলাবং, ব্রোকেন বীচ, ক্রিস্টাল বে এসব দেখে চলে যায়। ডে ট্রিপ কোন ট্যুর কোম্পানি থেকে না কিনে নিজে নিজেও সানুর গিয়ে টিকেট কেটে ঘুরে আসতে পারবেন।

 

নুসা পেনিদার সাথে আরও দুটা ছোট ছোট আইল্যান্ড আছে, নুসা ল্যাম্বোনগ্যান আর নুসা সেনিগ্যান। সময় থাকলে এ দুটোও ঘুরে আসতে পারেন। নুসা পেনিদা থেকে বোটে করে গিয়ে, এ দুটো আইল্যান্ড একদিনেই ঘুরে শেষ করতে পারবেন।

 

বালিতে আরও অনেক কিছু দেখার আছে, আমার পক্ষে সব দেখা সম্ভব হয়নি। তাই ঘুরতে যাবার আগে ডু ইয়োর ওন রিসার্চ। আপনার পাহাড়, জঙ্গল, সমুদ্র, পুরাতন স্থাপত্য না আর্টিফিশিয়াল এমিউজমেন্ট পছন্দ তার উপর নির্ভর করে ট্যুর প্ল্যান করবেন। তাহলে কম সময় নিয়ে গেলেও উপভোগ করে আসতে পারবেন।

 

 

এয়ারপোর্ট থেকে হোটেল/হোস্টেল ট্রান্সফার

এই জায়গা টা একটু ট্রিকি, আমি আগে পড়াশোনা করে গিয়েছিলাম তাই বাঁশ খাওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছিলাম। আমি দেশে থাকতেই গো জেক আর গ্র্যাব নামের দুটা এ্যাপ ইন্সটল করে নিয়েছিলাম। গো জেক হল পাঠাও এর মত আর গ্র্যাব উবার। এয়ারপোর্ট থেকে কুটা ভাড়া ট্যাক্সিতে ১-১.৫ লাখ রুপি অর্থাৎ ৬০০-৯০০ টাকা পড়ে নরমালি। গ্র্যাব কারে সেটা ২০-২৫ হাজার ১২০-১৫০ টাকা। আর গো জেক বাইকে ৬-৯ হাজার বা ৩৫-৬০ টাকা পড়ে।

আমি এয়ারপোর্টের ওয়াইফাই দিয়ে Ayu Nadi স্টোরের ওয়াকিং ডিরেকশন সেট করে নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। ১০-১২ মিনিট হাঁটার পরেই পেয়ে গেলাম। সেখানে সিম-কার্ড কিনে নেট অন করে গো জেক কল দিলাম। গো জেক বা গ্র্যাব কল দেবার সময় সবসময় নোটেবল কোন জায়গাতে দাড়িয়ে কল দিবেন, মেসেজে বলে দিবেন সেটার সামনে বা অপোজিটে আছেন তবে সহজে খুঁজে পাবেন।

 

যেখানে থাকবেন (হোটেল এবং হোস্টেল)

 

কুটা

 

আমি কুটাতে হোটেল এবং হোস্টেল দুটাতেই ছিলাম।

হোস্টেল ছিলাম তার নাম হল ক্যাপ্টেন গুজ। হোস্টেলে বাঙ্ক বেড থাকে নরমালি। ট্রেনের স্লিপার কোচে জার্নি করে থাকলে যেমন বেড থাকে অনেকটা সেরকম। নিচে একটা আরেকটা সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠতে হয়। এই হোস্টেলে এসি রুম ছিল, এক রুমে কয়টা বেড তার উপর পার নাইট ভাড়ার তারতম্য হয়। ১২ বেডের রুমে বেড রেন্ট হল ৩৬০ টাকা পার নাইট, ৬ বেডের রুমে ৪২১৳ আর ৪ বেডের রুমে ৪৮০ টাকা। আমি সবগুলাতেই ছিলাম, ৬ আর ৪ রুমের টা তে এটাচড বাথরুম আর বেলকোনি আছে,  ১২ বেডের টা তে নাই। আপনার সুবিধামত বুকিং দিবেন। সবচে বড় প্লাস পয়েন্ট সারাদিন হোস্টেলে প্যানকেক বানায়ে খাওয়া যায় + কফি ও ফ্রি। অনেক ইউরোপিয়ান আমেরিকান কে দেখেছি সারাদিন প্যানকেক খেয়ে চালায় দেয়। আমি দুদিন ব্রাঞ্চ করেছি প্যানকেক দিয়ে শুধু রাতে বাইরে খেয়েছিলাম।  এভাবে অনেকটা খরচ কমে আসে খাবারের। যত ইচ্ছা প্যানকেক বানিয়ে খেতে পারবেন। এটা হল বেস্ট পার্ট, আর সারাদিন মিউজিক চলে সুইমিং পুল ও আছে। ইন্টারনেট স্পিড ও অনেক বেটার।

নিচের লিংক এ গিয়ে বুক করতে পারেন অথবা হোস্টেল ওয়ার্ল্ড এ গিয়ে  Captain Goose লিখে সার্চ দিলেও পাবেন

https://www.hostelworld.com/hosteldetails.php/Captain-Goose/Kuta/266630

কুটাতে যে হোটেলে ছিলাম সেটার নাম বালি মানিক বিচ ইনন। এটার ডাবল বেডের রুমের ভাড়া ছিল  ৬৬০ টাকা পার নাইট। ব্রেকফাস্ট ইনক্লুড ছিল একটা প্যানকেক আর কফি। পরিবেশ সিকিউরিটি সবই বেশ ভাল ছিল।

 

নিচের লিংকে গিয়ে হোটেল বুক করতে পারবেন অথবা বুকিং ডট কম এ গিয়ে  Bali Manik Beach Inn লিখে সার্চ দিলেও পাবেন

http://www.booking.com/Share-txSfh1

উবুদ

উবুদে আমি একটা হোস্টেলেই ছিলাম। পুত্রা উবুদ গেস্ট হাউজ। এটা একটা রেস্টুরেন্টের উপরতলায় একদম উবুদের সেন্ট্রালে।  আমার একমাসের ট্যুরে থাকা সবচেয়ে সস্তা হোস্টেল। ১৬ বেডের একটা হোস্টেল সবসময় ওভারলোড থাকে। পার নাইট ভাড়া ছিল ২০৮ টাকা। ব্রেকফাস্ট ফ্রী ছিল (প্যানকেক), সাথে সারাদিন চা কফি আর পানিও ফ্রি।  হোস্টেলের ওয়াইফাই বালির সবচেয়ে ফাস্ট স্পিড ছিল। বাথরুম ক্লিন+ প্রতিটা বেডের সাথে পাওয়ার সকেট আর রোজ সন্ধ্যার পর হোস্টেলের নিচতলায় লাইভ মিউজিক হয়। রোজ কোন না কোন লোকাল ব্যান্ড পারফর্ম করে।

 

নিচের লিংক থেকে বুকিং দিতে পারবেন অথবা বুকিং ডট কম এ গিয়ে  Putra Ubud Guest House লিখে সার্চ দিলেও পাবেন

http://www.booking.com/Share-Qp5oiR

 

নুসা পেনিদা

 

নুসা পেনিদা তে দুটা হোটেলে ছিলাম। হোস্টেল সেখানে তেমন নেই।

 

প্রথম হোটেল ছিল ড্রাগনফ্লাই। দেবি নামের এক মেয়ে চালায়,অনেক ফেন্ডলি এবং হেল্পফুল। সিঙ্গেল রুমের পার নাইট রেন্ট হল ১০৮০ টাকা আর ডাবল রুম ১৩৫৯ টাকা। যদি আতুহ বিচের দিকে যেতে চান তবে এখানে থাকা বেটার হবে। জেটি থেকে ১০ কি.মি দুরে হোটেল টা। আর রুম ফ্যান সহ যদি এসি রুম নেন ভাড়া ২-৩০০ টাকা বেশি পড়বে।  এখানেও ব্রেকফাস্ট ইনক্লুডেড। ব্রেকফাস্ট এ প্যানকেক খাবেন এরা ৪ টা দেয়।  আর চা কফি সবই দেয় যেটা ইচ্ছা খান। আমি ব্রেড অমলেট খাইসিলাম যেটা লস প্রজেক্ট ছিল, প্যান কেক নিলে বেশি পেতাম।

 

নিচের লিংক থেকে বুকিং দিতে পারবেন অথবা বুকিং ডট কম এ গিয়ে  Dragonfly লিখে সার্চ দিলেও পাবেন

http://www.booking.com/Share-vfJ1BW

দ্বিতীয় হোটেল ছিল হোটেল জেসমিন ইনন।  এখানে ডাবল রুম ৯০০ টাকা ফ্যানসহ। তবে কোন ব্রেকফাস্ট নাই। আর এটা নুসা পেনিদার মাঝখানে পড়ে একদম। তাই আমার সাজেশন হল এখানেই থাকা। জেটি থেকে ১০ মিনিট হাঁটলেই এই হোটেল পড়ে। আর এর পাশেই মসজিদ আছে + ভাল খাবার দোকান। আর এখানে থাকলে ফেরার দিন এবং আসার দিন জেটি থেকে হোটেল ট্রান্সফারে ১০০০-১২০০ টাকা বেঁচে যাবেন।

 

নিচের লিংক থেকে বুকিং দিতে পারবেন অথবা বুকিং ডট কম এ গিয়ে  Jasmine Inn লিখে সার্চ দিলেও পাবেন

http://www.booking.com/Share-NePhgO

 

মানি এক্সচেঞ্জ

এয়ারপোর্টে সচরাচর অনেক কম রেট দেয়। মানি এক্সচেঞ্জ রেট কত দেখতে ফোনে একটা এ্যাপ নামিয়ে নিতে পারেন XE Currency এছাড়াও এই এ্যাপ থাকলে যেকোনো জিনিষের দাম কত কি বা খরচ সম্পর্কে দেশি দামের সাথে সহজে কম্পেয়ার করতে পারবেন। আমি এয়ারপোর্টে ১০০$ এ ১৩ লাখ ৪০ হাজার পেয়েছিলাম। কুটাতে আবার ১৩ লাখ ৭৫ হাজার থেকে ৮০-৯০ ও পাওয়া যায় মাঝে মাঝে। দেশ থেকে ৫০$ অথবা একটা ১০$ এর নোট নিয়ে নিবেন এয়ারপোর্ট থেকে হোটেল যাবার ভাড়ার জন্য।

 

টিপসঃ মানি এক্সচেঞ্জ করতে গুগল ম্যাপের সাহায্য নিন। গুগল ম্যাপে সার্চ দিবেন Money Exchange তারপর কিছু ফিল্টার চেক দিবেন, ক্লোজ টু মি, রেটিং,  ওপেন নাও। গুগলে রিভিউ পড়ে নিবেন, রেটিং ৪ স্টারের উপর হলেই সেখানে মানি এক্সচেঞ্জ করবেন।

 

স্ক্যামঃ বালির মানি এক্সচেঞ্জ হল পপুলার স্ক্যাম। ইন্টারনেটের রেটের চেয়ে সবসময় ৫-১০ হাজার রুপি কম পাবেন (১০০$ এর ক্ষেত্রে)।  যদি দেখেন কোন মানি এক্সচেঞ্জ ১৩৭৫-১৩৮০ এর বেশি দিচ্ছে মানে ১৪ লাখ মত,  বুঝবেন ঘাপলা আছে সেখানে। তারা আপনাকে টাকা গুনে দিবে একদম একুরেট পরে এসে দেখবেন ১ লাখ কম। বেটার হবে যেখানে আপনাকে এক্সচেঞ্জ এর রসিদ দিবে এমন জায়গাতে টাকা এক্সচেঞ্জ করা। কোন ছোট খাট চিপাচুপির দোকান থেকে দুরে থাকবেন। বড় মানি এক্সচেঞ্জ চেহারা দেখলেই বুঝবেন। আর বেশ কিছু দোকান ঘুরে রেট কমপেয়ার করে এক্সচেঞ্জ করলে ভাল রেট পাবেন।

বেটার হয় ধীরে ধীরে ভাঙানো, রাস্তায় ঘোরাঘুরির সময় যেখানে সুবিধা মত বেশি রেট পেলেন সেখানে ভাঙায় নিলেন। আমি এভাবেই তিনবারে এক্সচেঞ্জ করেছিলাম।

 

সিম-কার্ড এবং ইন্টারনেট

২-৩ দিন বা ৭ দিনের জন্য বালি গেলে সিম-কার্ড নেবার দরকার নাই। হোস্টেল বা হোটেলের ওয়াইফাই দিয়ে কাজ চলবে তবে খুব ভাল স্পিড না। এয়ারপোর্টে সিমের দাম ২-৩ লাখ রুপি চায়। বেটার হয় এয়ারপোর্ট থেকে বেরিয়ে একটু সামনে গেলেই আয়ু নাদি নামে একটা সুপার স্টোর পাবেন সেখান থেকেই সিম-কার্ড কিনতে পারবেন।

টেলিকমসেল এর কভারেজ বালিতে এবং আশপাশের সব জায়গাতে বেটার। আমি টেলিকমসেল নিতে সাজেস্ট করবো।  ৫ জিবি ইন্টারনেট একমাস মেয়াদ সহ আমার সিম-কার্ডের দাম নিয়েছিল ১২৫,০০০ টাকা বাংলাদেশি টাকায় ৭৫৫ টাকা। স্পিড অনেক বেটার, ইউটিউব পারফেক্টলি স্ট্রিমিং হয়। হোটেলে থাকার সময় হোটেলের ওয়াইফাই ইউজ করলে একমাসেও ৫ জিবি শেষ করতে পারবেন না।

 

ট্রান্সপোর্টেশন কিভাবে চারপাশ ঘুরে দেখবেন।

 

বালিতে কোন পাবলিক ট্রান্সপোর্ট নাই। বিমো বলে কিছু মিনিভ্যান টাইপের আছে সেগুলো খুঁজে বের করে ট্র্যাভেল করা যথেষ্ট ঝামেলার কাজ। ট্যাক্সি,কার, বাইক ভাড়া নিয়ে চলতে হবে।  এবার যেনে নেই।

 

কার রেন্টাল

আপনি এয়ারপোর্ট থেকে অথবা কুটা থেকে কার রেন্ট নিতে পারবেন। টয়োটা এভেঞ্জা ১,৫০,০০০ -১,৬০,০০০ রুপি নিতে পারে বাংলাদেশি টাকায় ১০০০ টাকা পার ডে এভারেজে ধরে নিন। কোয়ালিটি হিসাবে কারের রেন্ট ১০০০-২৫০০ এর মধ্যেই পেয়ে যাবেন। রেন্ট নিতে তেমন কোন পেপার লাগেনা। জাষ্ট হোটেলের ঠিকানা পাসপোর্ট ডিটেইলস হলেই চলে। গুগলে অনেক কার রেন্টাল কোম্পানির নম্বর পাবেন।  অথবা গুগল ম্যাপে কার রেন্টাল লিখে সার্চ দিলে আপনার আশেপাশে থাকা কার রেন্টালের ঠিকানা দেখাবে। গুগলে রেটিং দেখে যাবেন, ভাল রেটিং আর রিভিউ থাকলে প্রসিড করবেন। বেটার হয় যে হোটেলে বা হোস্টেলে উঠবেন তাদের থেকে খোঁজ নেয়া। তাদের কানেকশন থাকে আর অবশ্যই বার্গেইন করবেন একটু।

 

স্কুটার এবং মোটরসাইকেল রেন্টাল

আমার স্কুটার Honda Vario

বেস্ট আর চিপেস্ট ওয়ে বালি এক্সপ্লোর করার। রাস্তার মোড়ে মোড়ে স্কুটার রেন্টাল পাবেন। বেস্ট হচ্ছে যে হোটেল বা হোস্টেলে থাকবেন তার আশপাশ থেকে নেয়া। Honda Vario গুলা পার ডে ৫০০০০ রুপি বা ৩০০ টাকা পার ডে। নুসা পেনিদা তে ৭০,০০০ রুপি বা ৪১৭ টাকা নিবে। আবার আরেকটু বেটার ইয়ামাহার N Max স্কুটার নিতে চাইলে পার ডে ১,০০,০০০ রুপি পড়বে বা ৬০০ টাকা মত। যদি টাইট বাজেট না হয় তবে আমি এন ম্যাক্স নিতে বলবো, লং ড্রাইভে কমফোর্টেবল। ভারিওতে লং ড্রাইভে ইয়োর বাট উইল থ্যাংক ইউ ????,  রাতে ঘুমাতে গিয়ে বুঝবেন। এছাড়াও ৮০০-৯০০ সিসির মোটরবাইক ও রেন্ট নিতে পারেন সেগুলো ২ লাখ বা ১২০০ টাকা পার ডে। তবে বালির যে পাহাড়ী রাস্তা ৮-৯০০ সিসির বাইক নিয়ে লাভ নাই। কারের মতই এসব রেন্ট নিতে তেমন কোন পেপারস  ই লাগেনা। তবে অনেকে ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া দিতে চায়না রেন্ট।

 

ফুয়েলঃ তেল রেন্টাল প্রাইসের মধ্যে ইনক্লুডেড না। আপনাকেই কিনতে হবে। পেট্রোল অনেক সস্তা ৭,৫০০ রুপি বা ৪৫ টাকা লিটার। এটা পেট্রোল পাম্পের রেট, আর খুব ফ্রীকুয়েন্ট পাম্প পাবেন না, তাই বেটার হল সবসময় ট্যাংক ফুল করে নেয়া পাম্প থেকে। এছাড়া এক-দুই কি.মি পর পর রাস্তার পাশে যে কোন দোকানেই বোতলে করে পেট্রোল বেচতে দেখবেন।  রাস্তার পাশে দোকানে এক লিটার তেলের দাম ১০ হাজার রুপি বা ৬০ টাকা। এছাড়াও রিমোর্ট এরিয়া বা গ্রামের দিকে বড় পাম্প নেই সেগুলোতে ছোট ছোট মোবাইল পাম্প টাইপের পাবেন। সেগুলোতে বড় পাম্প থেকে অল্প একটু বেশি পে করতে হয়।

 

কার এবং মোটরবাইক ড্রাইভিং রিকোয়ারমেন্ট এন্ড সেফটি টিপস।

 

ড্রাইভিং লাইসেন্স

বালিতে ড্রাইভ করার জন্য আপনার ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রয়োজন। বাংলাদেশের লোকাল লাইসেন্স কাজের না।

 

যদি লাইসেন্স না থাকে কি করবেন?

একঃ দেনপাসার এর Jl Gunung Sanhyang পুলিশ স্টেশন থেকে টেম্পোরারি ড্রাইভিং লাইসেন্স নিতে পারেন। যা আপনাকে বালিতে একমাসের ড্রাইভিং পারমিট দিবে। এই পুলিশ স্টেশন কুটা থেকে ১০-১১ কি.মি দুরে।  সকাল ৮- দুপুর ১ টা এই সময়ের মধ্যে যেতে হবে। এই লাইসেন্স পেতে আপনাকে ৩,০০,০০০ রুপি বা ১৮০০ টাকা মত খরচ করতে হবে। খরচ কম বেশি হতে পারে, এখানেও ঘুষ চলে। পার্কিং লটেন পিছনে  “Pemohon Sim Asling/Foreigner License Applicant”  লেখা বিল্ডিং এ চলে যাবেন সেখানেই সব কমপ্লিট করতে পারবেন।

 

এ লাইসেন্স নিতে আপনার পাসপোর্ট, পাসপোর্টের ফটোকপি আর পাসপোর্ট সাইজ ছবি লাগবে। একটা রিটেন টেস্ট দিতে হবে, যার উত্তর পাশেই লেখা থাকে। কোন ড্রাইভিং টেস্ট দিতে হবে। তারা সাথে সাথে আপনাকে টেম্পোরারি লাইসেন্স ইস্যু করে দিবে। খরচ আরেকটু কমবেশি হতে পারে, ডিপেন্ড অন সিচুয়েশন।

এটা করতে আপনার একটা দিন পুরোটাই নষ্ট হবে। আমি কুটা থেকে উবুদ যাবার পথে খোঁজ নিয়ে এসেছিলাম। বাইক দুরে এক রেস্টুরেন্টের সামনে পার্ক করে ????। আপনি যদি বালিতে দুই সপ্তাহের বেশি থাকেন তবে এটা করে নেয়া বেটার। এটা বেসিক্যালি বালির পুলিশদের এক্সট্রা ইনকাম।

 

দুইঃ লাইসেন্স না থাকলে বা না করলে কি হবে? পুরা সাউথ ইষ্ট এশিয়া করাপ্ট পুলিশে ভরা, মালেশিয়া বাদে। বালির ৮০% ট্যুরিস্টের লাইসেন্স থাকেনা।  যাদের থাকে তাদের টা লোকাল লাইসেন্স। সো ইন্টারন্যাশনাল লাইসেন্স না থাকা মানে হচ্ছে আপনি লাইসেন্স-বিহীন চালাচ্ছেন। আমি প্যানিকড ছিলাম লাইসেন্সের ব্যাপারে এতকিছু জানতাম না। হোস্টেলে জিজ্ঞেস করা মেজরিটির কোন লাইসেন্স ছিল না। পুলিশ মেইনলি শহরের মধ্যেই থামায় তাছাড়া শহরের বাইরে কোথাও থামায় না।

 

এখন যদি থামায়,প্যানিকড না হয়ে বলবেন লাইসেন্স সিকিউরিটি হিসাবে নিসে বা খোঁজার বাহানা করবেন হোটেলে ভুলে গেছেন বলবেন। এটা বালির কমন সিনারি, পুলিশ ভালমতোই বুঝে আপনার লাইসেন্স নাই। কোন সিরিয়াস কেসফেস হবার পসিবিলিটি নাই, যদিও অনেক পুলিশ ভয় দেখাতে পারে প্যানিকড হবার কিছু নাই। তারা চায়ের পয়সার জন্যই থামায়, কমন প্র্যাকটিস। আমি নেটে থাকা প্রতিটা সিঙ্গেল ব্লগ পড়েছি, কোন সিরিয়াস ইনসিডেন্ট নাই। সিরিয়াস কেসে হেভি ফাইন দেয়া লাগতে পারে সেটা ১০০$ পর্যন্ত যেতে পারে। লাইসেন্স নাই+ কাউরে মেরে দিসেন তাহলে ইউ আর ইন ট্রাবল বস।

লাইসেন্স ছাড়া চালালে মানিব্যাগে ৫০,০০০- ১,০০,০০০ রুপির বেশি টাকা রাখবেন না। নরমাল ঘুষের রেঞ্জ হল ৫০-৩০০ হাজার রুপি বা ৩০০-১৮০০ টাকা।

সামহাও আই গট মাইসেলফ লাকি, ১৪ দিন টানা বালিতে স্কুটার চালানোর পর ও কখনো পুলিশ থামায় নি। কারণ হল আমি লু্ঙি পড়ে চালাইসি আর সবসময় হেলমেট ছিল সাথে। আর গায়ের চামড়া ব্রাউন হবার কারণে মনে হয় আমাকে লোকালদের মত লেগেছে। তাই আমার সামনে অনেক সাদা চামড়ার ফরেনার কে থামালেও আমাকে থামায় নি। তবে প্রিপেয়ার্ড ছিলাম সবসময়।

বি.দ্রঃ আমি অপশন জানালাম শুধু, আমি লাইসেন্সবিহীন চালাতে নিরুৎসাহিত করবো। বাকিটা ডু ইট এট ইয়োর ওন রিস্ক।

 

ট্র্যাফিক, রোড সেফটি এন্ড হায়ারিং টিপস

 

  • সবসময় হেলমেট পড়বেন, রেন্ট নেবার সময় ভাল হেলমেট দেখে নিবেন।
  • দেশ থেকে একটা ফাস্ট এইড কিট নিয়ে যাবেন। সবসময় নিজের সাথে ক্যারি করবেন। যদি কোন এক্সিডেন্ট হয় তবে কাজে দিবে। বি প্রিপেয়ার্ড।
  • যেখান থেকে রেন্ট নিবেন তাদের নম্বর /কার্ড এবং যে হোটেলে থাকবেন তাদের নম্বর/কার্ড ক্যারি করবেন। কোন প্রকার বিপদ বা ঝামেলাতে পড়লে তারা আপনাকে হেল্প করবে।
  • লিমিট ইয়োর স্পিড ইউ উইল বি সেফ। ৩৫-৪০ শহরের মাঝে স্পিড বা কম এর বেশি স্পিডে ড্রাইভ করবেন না। হাইওয়েতেও ৬০ এর মধ্যে থাকবেন। ততটাই স্পিড উঠাবেন যতটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। অনেক ট্যুরিস্ট কে এক্সিডেন্ট করে হোটেলে বসে থাকতে দেখেছি। একটু থ্রীল নিতে গিয়ে ট্যুর মাটি করবেন না।
  • গাড়ি রেন্ট নেবার সময় দেখে নিবেন ব্রেক, হেডলাইট এসব ঠিকমত কাজ করে কিনা, টেস্ট ড্রাইভ নিবেন প্রয়োজনে।
  • গাড়ির চারপাশের একটা ভিডিও বা ছবি তুলে রাখবেন। যেন গাড়িতে থাকা পূর্ববর্তী কোন স্ক্র্যাচ বা ড্যামেজের দায় আপনার উপর দিতে না পারে। কোন ড্যামেজ চোখে পড়লে তাদের কে বলবেন।
  • বার বার বিভিন্ন শহরে ভাড়া না নিয়ে এক জায়গা থেকে লম্বা সময়ের জন্য ভাড়া নিবেন। যেমন তিনদিনের জন্য ভাড়া নিলে ৩০০ টাকা পা ডে তে পাবেন আবার সেটাই যদি ৭-১০ দিনের জন্য নেন তবে পার ডে ২৫০ টাকা তে রেন্ট নামায় আনতে পারবেন। বেটার হয় লম্বা সময়ের জন্য হায়ার করা।
  • রেন্ট আপনার হোটেলের আশপাশ থেকেই নিবেন যেন ফিরিয়ে দেবার সময় এক্সট্রা ভাড়া দিয়ে হোটেলে ফিরতে না হয়।
  • কার রেন্ট নিলে যদি বেশি মানুষ থাকেন তবে ড্রাইভার সহ নিলে বেটার হবে। এতে আপনি এনজয় করতে পারবেন ঠিকমত। এক্সট্রা ১০০০-১২০০ টাকা পে করতে হবে ড্রাইভারের জন্য। ড্রাইভার থাকলে সে আপনাদের গাইড হিসাবে কাজ করবে, গুগল ম্যাপ দেখার পেরা থাকবে না।
  • স্কুটার রেন্ট নিলে অবশ্যই অটোমেটিক গিয়ারের টা নিবেন। বালির উঁচু নিচু রাস্তায় অটোমেটিক স্কুটার আপনার জন্য আশীর্বাদ। এতে আপনি পুরোটা সময় রোডে ফোকাস করতে পারবেন।
  • স্কুটার চালালে স্কুটারের জন্য সেলফোন হোল্ডার বা গাড়ি চালালে গাড়ির সেলফোন হোল্ডার নিয়ে নিবেন দেশ থেকে এসবের দাম বালিতে বেশি। আপনার ম্যাপ দেখতে সুবিধা হবে। নইলে একটু পর পর থেমে ম্যাপ চেক করতে হবে যা আপনাকে যথেষ্ট স্লো বানায় দিবে।  আর যদি সাথে পার্টনার কেউ থাকে দরকার নাই।

 

পার্কিং এবং সেফটি

অনেকের মাথায় প্রশ্ন আসে পার্কিং বা চুরি নিয়ে। বালিতে নরমালি এমন কিছু নাই। আপনি চাবি সহ গাড়ি রেখে দিলেও কেউ হাত দেবেনা। আমি ভুলে ২-৩ বার করেছি এমন। লক করে দিয়ে বাইকের উপর হেলমেট রেখে দিয়ে ঘুরে আসছি। বাংলাদেশ হলে হেলমেট চুরি হয়ে যেত আমি শিওর। আর অলমোস্ট সব ট্যুরিস্ট স্পটে এমনকি অনেক দর্শনীয় রাস্তার ধারে দাঁড়ানোর জন্যেও পার্কিং ফি দিতে হয়। নরমালি ১২-৩০ টাকা পার্কিং ফি হতে পারে। সো চিন্তা ছাড়া ঘুরেন। একটা টিপস হল আপনা  গাড়ি বা বাইকের নোটেবল কিছু মনে রাখুন বা চিহ্ন দিয়ে রাখুন।  একবার আমার স্কুটার খুঁজে পেতে ঝামেলা হয়েছিল। কারণ সিমিলার স্কুটার অনেক, আইডেন্টিফাই করা টাফ হয়ে যায় অনেকসময়।

 

অন্যান্য পরিবহণ ব্যবস্থা।

গো জেকঃ গো জেক হল বাইক রাইড শেয়ারিং সিস্টেম শুধু মাত্র বড় শহরগুলোতে পাবেন। ভাল ব্যাপার হল অনেক সস্তা ৫ কি.মি রাস্তার ভাড়া ৩০-৪০ টাকা মাত্র। আরেকটা ভাল জিনিষ হল এরা হেলমেট দিবে আপনাকে। হেলমেট পড়া বাধ্যতামূলক।

আমার প্রথম গো জেক বাইক রাইড

গ্র্যাবঃ Grab হল Uber এর মত কার শেয়ারিং সিস্টেম, এদের বাইক ও আছে। তবে গ্র্যাবের বাইক গো জেকের চেয়ে একটু কস্টলি। উবার ও আছে তবে গ্র্যাব সবচেয়ে বেশি পপুলার। ১৬-১৭ কি.মি এর রাইডে মাত্র ২০০ টাকা মত পে করেছিলাম। বাংলাদেশের চেয়ে ৫০% সস্তা বলা চলে।

 

টিপসঃ গ্র্যাব বা গো জেক কল করার সময় কোন বড় দোকান বা হোটেলের সামনে বা সহজে নোটিশ করা যায় এমন জায়গাতে দাড়িয়ে কল দিবেন।  অনেক ড্রাইভার ঠিকমত ইংলিশ বলতে পারেনা। আপনি তাদের মেসেজ দিতে পারেন, বলে দিবেন কি রঙের কাপড় পড়ে আছেন। সহজ হবে,নইলে খুঁজে পাওয়া যথেষ্ট  টাফ।

 

স্ক্যামঃ গ্র্যাবের ২-৩ টা অপশন আছে, গ্র্যাব কার হল সস্তা আবার গ্র্যাব ট্যাক্সি কস্টলি। কল দেবার সময় গ্র্যাব কার কল দিবেন। অনেক সময় ড্রাইভার রা এসে বলে গ্র্যাব ট্যাক্সি নিয়ে চলে এসেছি, তারপর তারা আপনাকে রাইড ক্যান্সেল করতে বলবে বা একটু ঝামেলা করবে ইমোশনাল ড্রামা টাইপ। ভুলেও যেটা কল দিসেন সেটার বাইরে যাবেন না। রাইড ক্যান্সেল করবেন না, যদি ক্যান্সেল সে করে বা আপনাকে করায় সোজা বলে দিবেন এ্যাপে উঠা টাকার এক পয়সা বেশি দিব না। আগেই ফিক্স করে নিবেন, সে হয়তো আপনাকে বলবে ডিসকাউন্ট বলে বলে নিয়ে যাবে পরে বাঁশ টা দিবে। তারা লোকাল পেরে উঠবেন না। তাই এসব ক্যান্সেল নিয়ে কাহিনী করলে না গিয়ে অন্য আরেকটা গ্র্যাব কল দিবেন। আর ভাড়া কখনোই কম বেশি হয়না। এ্যাপে যা দেখায় তাই আসে।

 

ব্লু বার্ড ট্যাক্সি বা লোকাল ট্যাক্সি: পুরা বালি জুড়ে আপনি ব্লু-বার্ড কোম্পানির ট্যাক্সি পাবেন। এরা মিটারে চলে নরমাল ট্যাক্সি বার্গেইন করতে হয়। সিম-কার্ড নিয়ে গ্র্যাব এ চলাচল করা ফার বেটার। একই দূরত্বের ভাড়ার ব্রেকডাউন কিছুটা এমন।

 

  • গো জেক বাইকঃ ৩৫-৪০ টাকা।
  • গ্র্যাব কারঃ ১২০-১৫০ টাকা।
  • ব্লুবার্ড ট্যাক্সিঃ ৬-৭০০ টাকা মিটারে আসবে।
  • নরমাল ট্যাক্সিঃ ৮-১২০০ টাকা (বার্গেইনের উপর ডিপেন্ড করে)

 

শাটল বাস

এছাড়াও বিভিন্ন হোটেল বা এলাকা থেকে শহরগুলোর মাঝে সাটল বাস যাওয়া-আসা করে। তবে অনেক কস্টলি আমার কাছে মনে হয়েছে। এগুলোর সাধারণত ট্যুর এজেন্সি গুলো এ্যারেঞ্জ করে থাকে। কুটা থেকে উবুদের দুরত্ব ৩৫ কি.মি মত। এটুকু যেতে আপনাকে গুনতে হবে ৪-৫০০ টাকা (৭০,০০০ রুপি)। এক থেকে দেড় ঘণ্টার পথ। আর গো-জেক বার গ্র্যাব দিয়ে এক শহর থেকে আরেক শহর যেতে পারবেন না। এগুলা শহরের মাঝে নির্দিষ্ট দূরত্বের মাঝেই চলাচল করে। শহর থেকে দুরে ট্যুরিস্ট স্পট গুলাতেও গ্র্যাব বা গো জেক সেভাবে পাওয়া যায়না।

 

খাবার

বালিতে খাবার নিয়ে আমি খুব কম এক্সপেরিমেন্ট করেছি। হুটহাট নতুন জায়গাতে গিয়ে নতুন খাবার ট্রাই করা বোকামি, সব খাবার সবাইকে স্যুট নাও করতে পারে। যার ফলে পেট খারাপ হবার সম্ভাবনা অনেকটা থাকে। ওদের লোকাল রেস্টুরেন্ট গুলো কে “ওয়ারুং” (Warung) বলে। আপনার এক বেলার খাবারে খরচ হবে ১৫,০০০ রুপি থেকে ৩০,০০০ রুপি এভারেজ অর্থাৎ ৯০-১৮০ টাকা । এর থেকে বেশি কম হতে পারে রেস্টুরেন্ট ভেদে। কিছু কমন খাবারের নাম বলি তাহলে একটা ধারনা পাবেন।

নাসি গোরেংঃ এটা ইন্দোনেশিয়ার ন্যাশনাল ডিস। এটা বেসিক্যালি ফ্রাইড রাইস এর উপর একটা ডিম পোঁচ করে দেয়। নাসি গোরেং অনেক সময় সি-ফুড ভার্সন ও পাওয়া যায় স্কুইড, চিংড়ি এসব দেয়া থাকে। ওভার অল টেস্ট ভাল চাইলে এক্সট্রা ঝাল নিয়ে স্পাইসি করে খেতে পারেন। বালিতে এটা খেয়েই অনেকে পুরা ট্রিপ শেষ করে। নরমালি নাসি গোরেং ১৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার রুপিতে বা ৯০-১৮০ টাকায় পাওয়া যায়। পশ টাইপের রেস্টুরেন্টে ৫০-৬০ হাজার বা ৩০০-৩৫০ টাকা পড়তে পারে।

মি গোরেংঃ এটা বেসিক্যালি নুডুলস।  ভেজিটেবল, চিকেন,  প্রন এসব দিয়ে বানানো। আমার কাছে অনেক টেস্টি মনে হয়েছে, স্ন্যাকস অথবা মেইন ডিস হিসেবেও খেতে পারেন। এটার দাম অনেকটা নাসি গোরেং এর মতই সিমিলার। ১৫-৩০ হাজার রেগুলার দাম, পশ রেস্টুরেন্টে ৫০-৬০ হাজার রুপি।

মি আয়াম

মি আয়ামঃ এটা স্যুপি রাইস নুডুলস, সাথে চিকেন, মিটবল, সেদ্ধ ডিম, ভেজিটেবল আর নিমকি দেয় একটা। আমার কাছে ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে টেস্টি ফুড এটা। নর্থ বালি তে খেয়েছিলাম। রাস্তার ধারে সাধারণত পাওয়া যায় এছাড়া রেস্টুরেন্টেও পাবেন। আমি রাস্তার ধারে ১৫ হাজার রুপি, ৯০ টাকায় খেয়েছিলাম এটার দাম আরও বেশি হতে পারে। স্ন্যাক্স হিসাবে অনেক হেভি বলা যায়।

সাতেঃ এটা আরেকটা ফেমাস ফুড। বেসিক্যালি গ্রীলড চিকেন। পিনাট, সয় সস দিয়ে খেতে হয়।  রাস্তার ধারে অনেক রেস্টুরেন্ট এ পাবেন। অর্ডার দেবার সময় শিওর হয়ে নিবেন চিকেন না পোর্ক। বেশিরভাগ সময় সাতে পোর্কের পাওয়া যায়। তাই হালাল খেতে চাইলে একটু সতর্ক থাকবেন।

 

তাছাড়া আপনি আলাদা আলাদা ভাত, মাছ, সবজি, মুরগি, গরু এসব অর্ডার করতে পারবেন।

 

 

 

 

 

 

 

এছাড়া কিছু খাবারের নাম বলে দেই অর্ডার দেবার সময় বুঝতে সুবিধা হবে।

নাসিঃ নাসি মানে হল ভাত/রাইস। এখন খাবারের আগে পিছে নাসি শব্দটা দেখলে বুঝবেন রাইস আইটেম।

 

রেন্দাং: রেন্দাং হল বিফ, অনেকটা কালাভুনা স্টাইলে রান্না করা। আমরা সাধারণত যেমন স্পাইসি খাই তার চেয়ে একটু কম ঝাল। তবে কয়েকদিন ওদের সব মিষ্টি মিষ্টি খাবার খেতে খেতে এটা খেয়ে শান্তি লাগবে।

রেন্দাং

আয়াম- আয়াম মানে হল চিকেন, কোন ডিশের নামে যদি আয়াম থাকে বুঝবেন চিকেন আছে তাতে।

 

ইকান- ইকান মানে হল মাছ। কোন সেট মেনু বা খাবারের আগে পিছে ইকান লেখা পেলে বুঝবেন মাছ।

 

বেবেকঃ বেবেক মানে হল হাঁস। বেবেক গোরেং বা রোস্টেড ডাক আপনি প্রায় রেস্টুরেন্টে পাবেন।

 

বাবিঃ এটা অবশ্যই মনে রাখবেন সবচেয়ে জরুরি। বাবি মানে হল পোর্ক, এখন বাবি যেখানে পাওয়া যাবে সে রেস্টুরেন্ট এভোয়েড করবেন। কারো হালাল হারাম ইস্যু না থাকলে খেতে পারেন।

 

গোরেং- গোরেং কোন খাবারের নাম না, গোরেং মানে হল ফ্রাইড। এখন যদি বলেন আয়াম গোরেং মানে ফ্রাইড চিকেন।

 

বাকার- বাকার মানে হল গ্রিলড, কয়লাতে ঝলসানো। এখন যদি ইকান বাকার বলেন, তাহল গ্রিলড ফিশ। আর যদি বলে ইকান গোরেং তাহলে ফ্রাইড ফিশ বা ভাজামাছ।

 

পানিঃ সবচেয়ে জরুরি পার্ট, আফটারঅল পানি ই জীবন। ইন্দোনেশিয়া তে পানি কে এয়ার বলে। পানির বোতলে এয়ার লেখা দেখে কনফিউজড হবেন না। ঝর্ণা গুলোর নামের আগেও দেখবেন এয়ার লেখা থাকে। বালির আবহাওয়াতে খুব সহজেই ডিহাইড্রেটেড হয়ে যেতে পারেন। তাই সবসময় নিজের সাথে পানি ক্যারি করবেন। ভুলেও বালির ট্যাপের পানি খাবেন না, সেফ না। মিনারেল ওয়টার বালিতে অনেক কস্টলি মনে হয়েছে আমার কাছে। তবে জায়গা ভেদে সস্তা।মার্ট গুলোতে দাম অনেক বেশি। দেড় লিটারের পানির বোতল ১০ হাজার রুপি বা ৬০ টাকা। রেস্টুরেন্ট গুলোতেও একই দাম।  তবে লোকাল ছোটখাট দোকানে কিনলে ৫.৫০০ রুপি বা ৩৩ টাকাতেও দেড় লিটারের বোতল পাবেন।

 

আমি কম করে হলেও ২ হাজার টাকার পানি কিনে খেয়েছি। এখানে টাকা সেভ করার বুদ্ধি পরে পেয়েছিলাম। তা হল পানির গ্যালন কিনে নেয়া। নীল রংঙের যে বড় গ্যালন আমাদের দেশে রেস্টুরেন্টে পাওয়া যায় সেগুলো কিনতে পারবেন। ৩৫ হাজার রুপি বা ২০০ টাকা মত নিবে। হোটেল বা হোস্টেল রুমে রেখে দিবেন।  আর রোজ রিফিল করবেন। দয়াকরে দেশ থেকে একটা রিফিলেবল ওয়াটার বোটল কিনে নিয়ে যাবেন। পাল্টিক বোতল কিনে পরিবেষ নষ্ট করবেন না। আর রিফিলেবল বোতল আপনার অনেক টাকা সেভ করবে। তাছাড়া রেস্টুরেন্ট এ রিফিলেবল বোতল নিয়ে গেলে অস্বস্তিকর ঘটনা এড়াতে পারবেন। আপনি বাইরে থেকে পানির বোতল নিয়ে গেলেন অনেক সময় তারা বিলের সাথে সে পানির বোতল এড করে দেয়। সো তখন একটা ঝামেলা, ভুল বোঝাবুঝি হয়। তাই রিফিলেবল বোতল সবদিক থেকে বেটার।

 

খাবার স্ন্যাকস পানি এসব এসব বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে পাবেন। মিনি মার্ট, ইন্দোমার্ট, কে কে মার্ট এসব ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে। তবে মনে রাখবেন লোকাল দোকানের থেকে ৩০-৪০% বেশি দাম দিয়ে সব কিনতে হবে। নরমালি পানি আপনি ৫.৫ হাজারে বাইরে পাবেন, সেটা আপনাকে এসব মার্টে ১০ হাজার রুপি দিয়ে কিনতে হবে। এসব মার্টে সুবিধা হল আপনি ইন্সট্যান্ট নুডুলস,  কফি বানায় খেতে পারবেন, গরম পানির ব্যবস্থা থাকে।

 

কিভাবে রেস্টুরেন্ট খুঁজে বের করবেন?

 

গুগল ম্যাপ হল লাইফ সেভার। বিশেষ করে যখন হালাল ফুড খোঁজার ব্যাপার আসে। গুগল ম্যাপে গিয়ে লিখবেন ” Halal Restaurant”।  সার্চ রেজাল্টে আপনার আশেপাশের সব রেস্টুরেন্ট দেখাবে। খোলা আছে কিনা, রেটিং, আপনার থেকে কত কাছে এসব ফিল্টার করে খুঁজে নিন। তাছাড়া ম্যাপেই রিভিউ পড়তে পারবেন, অনেক সময় রেস্টুরেন্টের মেনু কার্ডের ছবি পেয়ে যাবেন। খাবারের দাম আর রেস্টুরেন্ট এর পরিবেশ দেখেই বুঝতে পারবেন আপনার বাজেটের কিনা।

 

তাছাড়া ট্যুরিস্ট হাবের আশপাশে খাবারের দাম সবসময় বেশি থাকে। ট্যুরিস্ট প্লেস আর হোটেল বেশি আছে এমন জায়গার চারপাশে খাবারের দাম বেশি। যেমন কুটাতে বিচের পাশেই বেশি হোটেল, এগুলার আশেপাশে সব রেস্টুরেন্টে দাম বেশি। বিচ থেকে যত দুরে যাবেন খাবারের দাম কমতে থাকবে। আমি যেমন কুটা বিচের খুব কাছে ছিলাম, হোস্টেলের আশেপাশে খাবারের দাম যথেষ্ট বেশি, এমনকি ছোটখাট রেস্টুরেন্টেও। তাই সেন্টার ছেড়ে ১-২ কি.মি বা ১০-১৫ মিনিট হেটে দুরের রেস্টুরেন্ট গুলোতে গেলাম, হালাল ছিল বলে আরও যাওয়া। সেদিকে গিয়ে দেখি দাম অর্ধেক। ২৮-৩০ হাজার রুপির মি গোরেং, নাসি গোরেং ১৫ হাজার রুপি। যেখানে রেস্টুরেন্ট এ ১০ হাজার রুপিতে পানি পাওয়া যায়না সেসব রেস্টুরেন্টে ৫.৫ হাজার রুপি। একদম ন্যায্য দাম, আর ফুড টেস্ট ও অনেক বেটার। শেষের দিন এক রেস্টুরেন্টের সন্ধান পেলাম, একদম রান্না করে গরম গরম খাবার সার্ভ করলো।

 

আর যেখানে ভিড় বেশি সেখানে খাবার ভাল,  রেস্টুরেন্ট খোঁজার সবচেয়ে বেস্ট ওয়ে। আর কোন খাবার যদি রুচি না হয় বা খেতে ভাল না লাগে, খাবেন না পেট খারাপ হবে শিওর। তাই খাবারে জোর করবেন না কখনো। আর সবসময় খাবারের ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন। একবার ফুড পয়জনিং বা লুজ মোশন শুরু হলে পুরা ট্যুর মাটি হয়ে যাবে।

 

যাবার আগে কি কি সাথে নিবেন।

বালির আবহাওয়া আমাদের জন্য আরামদায়ক বলা যায়, সর্বোচ্চ ৩০ সেলসিয়াস হয়। রিল্যাক্স ভ্যাকেশনে যদি যান তবে কমফোর্টেবল কাপড়চোপড় নিবেন। ১৫ দিন বা ১ মাসের জন্য ২ সেট কাপড় যথেষ্ট এরপরে প্রয়োজন হলে কিনে নিবেন অযথা ব্যাগ ভারি করার মানে নেই৷ নিচে কিছু লিস্ট দিলাম যেগুলো নেবার চেষ্টা করবেন।

  • যদি নর্থ বালি বা মুন্দুকের দিকে যেতে চান তবে অবশ্যই গরম কাপড় নিবেন, উইন্ড ব্রেকার জ্যাকেট হলে বেটার৷
  • যদি ট্রেক করতে চান তবে ভাল কেডস নিয়ে যাবেন৷
  • বিচে যাবার জন্য এক জোড়া স্লিপার আর পারলে ড্রাইব্যাগ।
  • ছাতা রেইনকোর্ট নেয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে৷
  • রোদ থেকে বাঁচার জন্য সানক্যাপ, সানস্ক্রিম, সানগ্লাস, ফুল স্লিভ শার্ট/টি-শার্ট, স্কার্ফ এসব অবশ্যই নিবেন
  • বিচে নামার জন্য ২ সেট শর্টস, মেয়েরা যাতে কমফোর্টেবল।
  • সবচেয়ে জরুরি, ফার্স্টএইড কিট সাথে নিজের নিয়মিত মেডিসিন লাগলে সেসব আর বেসিক যা লাগে সব নিবেন৷
  • যদি হোস্টেলে থাকেন তবে অবশ্যই প্যাডলক বা ছোট তালা নিয়ে যাবেন। কম্বিনেশন লক নিলে বেটার এতে চাবির টেনশন থাকবে না।
  • রিফিল করার জন্য পানির বোতল।
  • সাবান,শ্যাম্পু, শেভিং কিট এবং প্রয়োজনীয় টয়লেটারিজ।
  • বিভিন্ন সাইজের কিছু পলিথিন ব্যাগ।
  • শুকনা খাবার যদি নিতে চান, খেজুর, বাদাম, ইন্সট্যান্ট কফি। হোস্টেলে রান্নার ব্যবস্থা থাকে চাইলে অল্প কিছু মশলাপাতি নিয়ে যেতে পারেন৷
  • যদি একা যান আর বাইক চালানোর প্ল্যান থাকে তবে সাথে বাইকের জন্য সেলফোন হোল্ডার নিয়ে যাবেন।
  • পাওয়ার ব্যাংক আর পারলে সাথে ছোট মাল্টিপ্লাগ।

    টাইপ সি পাওয়ার এডাপ্টার

  • সবচে জরুরি ইন্দোনেশিয়া তে টাইপ সি পাওয়ার রাউন্ড শেইপ এডাপ্টার ব্যবহার করে। তাই সাথে অবশ্যই কনভার্টার নিয়ে যাবেন নইলে ভোগান্তি তে পড়তে হবে। অনেক সময়  হোটেল/হোস্টেল থেকে দেয় তবে নাও দিতে পারে অনেকসময়।  পাশের ছবি দেখলে বুঝবেন।
  • প্যানিকড হবেন না, সাথে করে প্রচুর সাহস নিয়ে যাবেন, যেখানে যাবেন সে জায়গা সম্পর্কে তথ্য যেনে যাবেন আর বিপদে পড়লে কিভাবে বের হবেন তার একটা ধারনা রাখবেন। আর সবসময় প্রস্তুত থাকবেন।

 

কোন ব্লগ এবং বই পড়া জরুরি

 

নতুন জায়গা যাবার আগে আপনি কেন প্যানিকড হোন ভাবুন তো?

একটাই কারণ আপনি জায়গাটি সম্পর্কে তেমন কিছু জানেন না। তাই এই ভয় কে জয় করতে আপনাতে পড়তে হবে। ৭ দিনে ঐ ঐ জায়গা ঘুরলাম এত খরচ হল, এটা এটা করবেন আর ঐ জিনিষটা অবশ্যই খাবেন এমন লেখা পড়ে আপনি কখনোই জায়গাটি আসলে কেমন তা জানতে পারবেন না। নিচে কিছু লিংক দিচ্ছি যাবার আগে অবশ্যই পড়ে নিবেন।

১. আমার এই আর্টিকেল টা পুরাটা আবার ভালভাবে পরবেন বেসিকস টা বোঝার জন্য।

২.  উইকি ট্র্যাভেলে বালির পেজ টা, সাথে লিংকড যত পেজ আছে সেগুলো ও পড়ার চেষ্টা করবেন।

https://wikitravel.org/en/Bali

৩. লোনলি প্ল্যানেট বালি এন্ড লম্বক গাইড। টাকা থাকলে কিনে নিবেন নয়তো টরেন্টে পাবেন। নিচে স্টোরের লিংক দিলাম।

https://shop.lonelyplanet.com/products/bali-lombok-travel-guide-16

৪. সময় পেলে ট্রিপ এডভাইজার এর বালি ফোরাম টা তে একটু ঢু মারবেন৷ অনেক সম্ভাব্য সমস্যার সমাধান সেখানেই পাবেন।

https://www.tripadvisor.com/ShowForum-g294226-i7220-Bali.html

৫. গুগল করা, গুগলে শুধু  Bali লিখে সার্চ দিবেন এরপর নিচে দেখবেন থিংস টু ডু তারপর আরো কিছু ডিটেইলস পাবেন অনেক সময় কিছু বিভিন্ন ডিউরেশনের আইটিনারি দেয়া থাকে।  যেমন ৪ দিনে কি কি করবেন, ৭ দিনে কি কি করবেন এমন৷

এরপর  Bali Backpacking লিখে সার্চ দিলে অনেক আর্টিকেল পাবেন সময় সুযোগ বুঝে পড়বেন।

৬. কারো স্কুটার বা বাইক নিয়ে পুরা বালি চক্কর দেবার ইচ্ছা হলে নিচের লিংকের আর্টিকেল টা পড়তে পারেন। আমি এর কিছু রুট ফলো করেছিলাম।

 

http://www.seetheworldinmyeyes.com/world-trip-recommendations/scooter-rental/9-days-of-driving-around-bali-island/

 

এছাড়া আমি কিছু ভ্লগ করেছিলাম সেগুলা চাইলে দেখতে পারেন। প্রথমেই বলে নেই কোয়ালিটি খুব ভাল নয়।

https://www.youtube.com/playlist?list=PLzt8KnURzor52zlU4tUYr0JDLRrf_vJ86

লোকাল ল্যাঙ্গুয়েজ।

মালেশিয়া আর ইন্দোনেশিয়ার ভাষা ৮০% সিমিলার। অনেকটা হিন্দি উর্দুর মত। সবাই কমবেশি ইংরেজি বুঝে। তবে যদি দু চারটা শব্দ শিখে যান তবে তারা বেশ খুশি হয়।

Thank You: Terima Kasih উচ্চারণ টা ত্রিমা কাহসে এর মত হয় তারপরেও আপনার মত করে বলবেন তাদের থেকে শিখে নিবেন এটাতেও মজা।

Welcome:   Sama-sama

এই দুইটা জানলেই যথেষ্ট এছাড়া যদি মনে করেন তবে নিচের গুলাও শিখে যেতে পারেন।

How are you? :  Apa kabar?

I’m fine – Baik-baik saja

Please-  Silakan

Sorry : Maaf

Where is Bathroom? – Kamar kecil di mana?

Good Morning/Afternoon : Selamat pagi/sore

 

বালির ব্যাপারে আমার ফাইনাল থট

 

বালি আমার পুরা জিবনের স্মরণীয় একটু ট্যুর হয়ে থাকবে। অনেক কিছু শিখেছি জেনেছি বুঝেছি। যারা সলো ব্যাকপ্যাকিং করতে চান তাদের জন্য বেষ্ট, দুইটা কারণে ভিসা ফ্রি এন্ট্রি আর সস্তা। যদিও ব্যাকপ্যাকিং এর স্বর্গ হল থাইল্যান্ড। ট্যুরিস্ট প্লেস ছাড়া যদি একটু লোকাল এরিয়াতে যান তবে বুঝবেন বালির মানুষজন অনেক ভাল এবং ওয়েলকামিং।

যারা বাজেটে হানিমুন করতে চান তাদের জন্য বালির চেয়ে বেষ্ট আমার কাছে কিছু নাই। মালদ্বীপের বাজেট ভার্সন হল বালি। প্রাইভেট ভিলা অনেক সস্তা যা আমার কাছে বেষ্ট মনে হয়ছে। যারা ফ্যামিলি নিয়ে বাজেট ট্রিপ দিতে চান তারা৷  Air BnB তে এপার্টমেন্ট বুক করে থাকতে পারেন। চাইলে চালডাল নিয়ে যেতে পারেন নিজে রান্না করে খেতে পারবেন৷ আর   Air BnB হোটেলের চেয়ে অনেক সস্তা।

বালির একটা জিনিষ ই আমার খারাপ লেগেছে, তা হল প্রচন্ড কমার্শিয়াল৷ টাকা ছাড়া একটা কাজও হবে না৷ সবচে লেইম হল, ভাল ভিউ আছে এমন কোন রাস্তার বাঁকে যদি বাইক বা গাড়ি দাড় করিয়ে একটু দেখতে চান তবে আপনাকে পার্কিং ফি দিতে হবে। অফিশিয়াল কিছু না, লোকাল দের বানানো। আর ট্যুরিষ্ট প্লেস গুলোতে তারা মাছির মত আকড়ে ধরবে আপনাকে, রেডি ফর দিস। আরেকটা জিনিষ হল সিরিয়াসলি কেনার ইচ্ছা না থাকলে কোন দোকানে দাম জিজ্ঞেস করার দরকার নাই, নইলে ভালমত ধরে।

আরো অনেক কিছু বলার ছিল, কিন্তু আমার লিখার ধৈর্য্য কুলাচ্ছে না আর কেউ পড়বে বলে মনেও হয়না। সবাই ভাল থাকবেন, আর কাউকে বা কারো লেখা ব্লাইন্ডলি ফলো করবেন না, আমারটাও না। সবাই নিজের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে লিখে আপনি অনেকজনের পড়ে নিজের মত করে বুঝে নিবেন। আপনার সামনের যাত্রা শুভ হোক।

 

ভ্রমনে যেখানেই যাবেন ময়লা আবর্জনা ফেলবেন না কোথাও।  আপনার পরের জনের জন্য পরিষ্কার রাখুন জায়গাটি।

 

 

 

Facebook Comments
This Post Has 8 Comments
  1. Thanks a lot brother for such a detailed information about Bali.
    It’ll be very helpful for the tourist of Bali.
    I read it all. Hope will read it again as you said.

    Thanks???

  2. Thanks a lot for your detailed information about Bali.
    It’ll be very helpful for the travellers to Bali.
    Thanks and keep up the good work.

  3. Thanks a lot for very detailed information. Have recently visited Thailand along with my wife from 16-Aug-18 to 20-Aug-18. Short time I know. Have covered Phuket, Phi Phi Island, Bangla Road -Phuket, Madame Tussaud Bangkok. Roamed aroundPratunam Market, Indra Market, Big C, Central World, Siam Paragon, Siam Discovery, Robinson. Experienced BTS Sky Train. It was really enjoyable. The best part is it was my first time tour outside the country and instead of buying any package; I had arranged everything my self.Thanks for the detail information about Bali. Planning to visit next. This travelogue would be helpful.

  4. এই পোস্টের জন্য কমেন্ট করে আপনাকে ধন্যবাদ না দিলে অপরাধ হবে। আমি প্রতিদিন প্রচুর ভ্রমন ব্লগ ও ভ্রমন ভ্রুপের পোস্ট পড়ি। কিন্তু এমন বিস্তারিত আর রিডার কি চায় সেদিকে নজর দিয়ে লেখা পোস্ট বাংলায় খুব কম পেয়েছি। আপনার অন্য রিলেটেড পোস্টের লিংক দেয়াটাও ভাল লেগছে যা বাংলা লেখকরা করতে চায় না।

    আমি বালি যাচ্ছি না দ্রুত তবে সেইভ করে রাখছি। আশা করি আরো ডিটেইল্ড পোস্ট লিখতে থাকবে। ?

  5. আমি আর আমার স্ত্রী বালি ঘুরে আসলাম গত ২৪ সেপ্তেম্বর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর। আপনার এই পোস্ট অসম্ভব কাজে দিয়েছে। ধন্যবাদ।

  6. এতো ধৈয্য নিয়ে এতো বড় এবং informative লেখার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। যাবার প্রিপারেশন নিচ্ছি। আপনার লেখাটা অনেক কাজে আসবে। আমি অনেক ঘাটাঘাটি করে মোটামুটি একটা প্ল্যান রেডি করেছি। আপনার লেখাতে অনেক নতুন কিছু পেলাম যেগুলো আর কেউ বলেনি বা হয়ত তারা নিজেরাও এতো কিছু নোটিশ করেনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *