কিভাবে দ্রুত ভ্রমণের এর চেয়ে ধীরে ভ্রমণ আপনাকে সুস্থ রাখবে?

কিভাবে দ্রুত ভ্রমণের এর চেয়ে ধীরে ভ্রমণ আপনাকে সুস্থ রাখবে?

Sharing is caring!

ভ্রমণে হোক আর যেখানেই হোক আমাদের উচিৎ শরীরের সুস্থতাকে সবার আগে প্রাধান্য দেয়া। সঠিক ঘুম, ঠিকমত খাবার খাওয়া, অল্প এক্সারসাইজ করা, এসব খুবি জরুরি। তবে যখন আপনার প্রতিদিন নতুন জায়গা যাবার জন্য তাড়া থাকবে , রোজ বাস, ট্রেন, প্লেন ধরার জন্য দৌড়ের উপর থাকবেন তখন এসবের কিছুই ঠিকমত হবে না। না হবে ঘুম , খাওয়া, এক্সারসাইজ তো আরও দুরের কথা।

এমন ভাবে ভ্রমণ আপনার শরীরের উপর অনেক বাজে প্রভাব ফেলবে। দুই-একদিন এভাবে ভ্রমণ করলে হয়ত সমস্যা হবে না, কিন্তু সপ্তাহ জুড়ে বা তার বেশি সময় এভাবে ভ্রমণ করবেন তখন অবশ্যই সমস্যা হবে। ধীরে ভ্রমণ করলে আপনি নিজের যত্ন নিতে পারবেন।

ধীরে ঘুরে বেড়ানো হয়ত বোরিং মনে হতে পারে, কিন্তু যখন আপনি বোর হবেন আর করার কিছু থাকবে না তখন আপনি নিজেকে নিয়ে , আপনার চারপাশ কে নিয়ে ভাবার সময় পাবেন। দেশের বাইরে থাকলে আপনার ঘুরে বেড়ানো ছাড়া করার তেমন কিছু নাই, তাই বোর লাগলে আপনি করার জন্য নতুন কিছু খুঁজবেন। দেখা গেল হোটেল থেকে বেরিয়ে রাস্তার ধারে চা ওয়ালার সাথে গল্প করছে বা হোস্টেলের রিসিপশনিস্ট এর সাথে আড্ডা দিচ্ছেন। অথবা পাশের রুমের ভিনদেশি কারো সাথে।

আমি এভাবে ধীরে ভ্রমণের কারণে অনেক বন্ধু বানিয়েছি, অনেক নতুন মানুষের সাথে কথা বলেছি। তাদের জীবন নিয়ে চিন্তাভাবনা জেনেছি। একটা জায়গাতে ঘুরতে যাওয়া মানে সেখানকার সুন্দর টুরিস্ট প্লেস দেখা নয়, সেখানকার মানুষের সাথে পরিচিত হওয়া তাদের, সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হওয়া। এসব তখন ই হবে যখন আপনি সময় নিয়ে ঘুরবেন।

আমাদের বেশিরভাগ মানুষ ই ২-৩ দিন বা এক সপ্তাহের জন্য বিদেশ ঘুরতে যায়। ২-৩ দিনে তো একটা ছোট গ্রামের সব দেখা যায় না , একটা দেশ ঘুরে ফেলা দুঃসাহস ছাড়া কিছু না। এখন ধরাযাক আপনি ৩ দিনের জন্য একটা শহরে গেলেন। আপনি চেষ্টা করবেন কিভাবে তিনদিনে সব ঘুরে ফেলা যায়। তিনদিনে দৌড়ের উপর হয়তো ঘুরলেন, এভাবে শুধু ক্যামেরার মেমোরিতে ছবি থাকবে, আপনার মাথায় থাকবে না কিছুই।

এখন যদি আপনি ২ সপ্তাহ সময় নিয়ে সেই শহর টা ঘুরবেন তখন আপনার সব দেখাও হবে আর সুস্থ ও থাকবেন। একটা সময় যখন মনে হবে এ শহর আপনার এর সব অলিগলি আপনার চেনা তখন বুজবেন আপনি সত্যি সেই শহর টা ঘুরেছেন। আর এভাবে ধীরে ঘুরে বেড়ানো শুধু স্বাস্থ্যের জন্য ভাল টা নয় বরং আপনার পকেটের জন্যেও ভাল, ধীরে ঘুরলে খরচ কম হয়।

সবার ভ্রমণের উদ্দেশ্য হয় ব্যস্ত জীবন থেকে বেরিয়ে একটু সস্তির সন্ধানে যাওয়া, কিন্তু এভাবে দৌড়ের উপর থাকলে সেই আরাম আর কই হইলো। বেড়াতে গেলেন মানসিক প্রশান্তির জন্য আর ফিরে আসলেন ক্যামেরা ভর্তি কিছু ছবি নিয়ে। এই লেখায় সুস্থ বলতে মানসিক সুস্থতাও বুঝিয়েছি। ভ্রমণে গিয়ে নিজেকে রিসেট করে আর সুস্থ ভাবে ফিরুন এই কামনায় আজকের লেখাটি শেষ করছি

Facebook Comments