ভ্রমণে নিরাপদে থাকার কিছু টিপস

পুরো দুনিয়া ঘুরে বেড়ানো হয়ত অনেকের ই স্বপ্ন আর এর একটা অন্যরকম থ্রিল আছে। বেশিরভাগ সময়ই সবাই ঘুরতে গিয়ে নিরাপদে ফিরে আসে। তবে কম হলেও অনেকের সাথে ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটে যায়, আবার একটু সতর্ক থাকলে এসব এড়ানো যায়। ভ্রমণের সময় নিরাপত্তা নিয়ে অনেকেই খুব একটা ভাবে না আবার এমন অনেক আছে যারা অনেক বেশি ভেবে নিয়ে ঘর থেকেই বের হোন না। দেশের বাইরে আর দেশে কোন দুর্ঘটনার কবলে পড়া একই, দেশে থাকলে মানুষের সান্ত্বনা পাবেন বাইরে থাকলে সেটা হয়ত পাবেন না এতটুকুই।
এখন সবচেয়ে বাজে পরিস্থিতির জন্য কিভাবে প্রস্তুত করে নিয়ে যাবেন সে নিয়েই আজকের লেখা।
Contents
যাবার আগে জানুন
“জ্ঞান ই শক্তি” এই কথাটির সাথে অনেকেই পরিচিত। নতুন জায়গাতে কোনকিছু না জেনে চলে যাওয়া অনেকের কাছে থ্রিলিং এক্সপেরিয়েন্স মনে হতে পারে, তবে এটা নেহাত বোকামি ছাড়া কিছু নয়। আপনি যেখানে যাচ্ছেন সেই জায়গা সম্পর্কে আপনার খোঁজ নেয়া উচিৎ, কমন সমস্যা গুলো কি হতে পারে? কোন রিস্ক আছে কিনা এসব আপনার জানা উচিৎ। সব জনপ্রিয় টুরিস্ট প্লেসে কিছু কমন স্ক্যাম থাকে, আপনি সহজেই সেগুলোর পাল্লায় পড়তে পারেন। চিট/বাটপার দুনিয়ার সব কোনাতেই আছে, তাই জেনে যাবেন সেখানে কমন স্ক্যাম গুলো কি। অনেকে নিজেকে মহাজ্ঞানী ভেবে এসবে পাত্তা দেয় না, কিন্তু না জানলে আপনি যেই হন না কেন এসবের ফাঁদে পরবেন। এসব তথ্য আপনি জানতে পারবেন যারা অলরেডি ঘুরে এসেছে অথবা গুগল করে, বিভিন্ন ব্লগ এবং ট্যুর গাইড পড়ে।
টাকা লুকিয়ে রাখা
ভ্রমণ ঠিকমত শেষ করতে যা লাগবে টা হল টাকা। তাই টাকা নিরাপদে লুকিয়ে রাখা খুবি জরুরি। ভ্রমণে গিয়ে টাকা হারালে খুব বাজে সমস্যার সম্মুখীন হবেন। টাকা কয়েক জায়গাতে রাখা আর দেশে কারো কাছে ব্যাকআপ কিছু টাকা রেখে যাওয়া সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। এই নিয়ে আরও বিস্তারিত জানতে “ভ্রমণের সময় কিভাবে টাকা নিরাপদে লুকিয়ে রাখবেন?” আর্টিকেল টি পড়েন ।
লোকাল দের সাথে মিশে যাওয়া
একটা কথা প্রচলিত আছে , “যেমন দেশ তেমন ভেস”। যেখানে গিয়েছেন সেই জায়গার কালচার সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবেন, তারা কেমন পোশাক আসাক পরে জেনে যাবেন। অনেক দেশে পোশাক আসাক নিয়ে স্ট্রিক্ট রুলস আছে, যাবার আগে এসব জেনে না গেলে ভাল বিপদে পড়তে পারেন। এসব নিয়ে আরও বিস্তারিত জানতে নিচের লিংকের উইকিপিডিয়ার আর্টিকেল টি পড়তে পারেন এছাড়া গুগল করেও তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন।
https://en.wikipedia.org/wiki/Clothing_laws_by_country
আপনাকে যদি টুরিস্ট এর মত লাগে প্রথম সাক্ষাতে তবে আপনি চোর/বাটপারের টার্গেট হতে পারেন খুব সহজেই। তাই পাবলিক এটেনশন ড্র করে এমন পোশাক আসাক বা কার্যকলাপ করবেন না। লোকাল কাপর-চোপড় পড়া মানে আপনি লোকালদের কালচার তাদের আইন কে সম্মান দিচ্ছেন, এভাবে হয়ত আপনি লোকাল কিছু বন্ধু ও বানাতে পারবেন।
বন্ধু এবং পরিবারের সবাইকে জানানো আপনি কোথায় যাচ্ছেন
অনেকেই আছে চলে গেলাম নেটওয়ার্কের বাইরে বলে বেরিয়ে যায়। হয়ত কাউকে জানিয়ে না যাওয়া বা কিছুদিনের জন্য হারিয়ে যাবার ইচ্ছা অনেকের মধ্যে আছে। এভাবে আপনি হয়ত অন্যরকম একটা অনুভূতি পাবেন , তবে যদি কোন বিপদে পড়েন তবে আপনাকে উদ্ধার করার মত কেউ থাকবে না। আপনি হয়তো কয়েকদিনের জন্য রিমোট এরিয়া তে যাচ্ছেন , যোগাযোগের কোন মাধ্যম নাই, যেমন পাহাড়ে ট্রেকিং এ জাওয়া। আপনি যদি কাউকে জানিয়ে যান আর গিয়ে কোন বিপদে পড়েন আর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে না ফেরেন তবে আপনার খোঁজ করার জন্য কেউ থাকবে। “Into The Wild” নামে সত্য ঘটনার উপর একটা মুভি আছে , যেখানে এক ব্যাকপ্যাকার এমন কাউকে না জানিয়ে ট্যুরে যায় আর এক জায়গাতে আটকে পড়ে না খেয়ে মারা যায়।
এখন আপনি ২ রাতের জন্য যান বা ১ মাসের লম্বা ব্যাকপ্যাকিং সবসময় পরিবারের মানুষকে আপডেট দিতে থাকবেন। যাবার আগে আপনার ট্যুর প্ল্যান বা আইটিনারি বিশ্বস্ত কিছু মানুষকে বলে যাবেন বা দিয়ে যাবেন। সোশ্যাল মিডিয়া তে নিয়মিত চেকিন দিবেন যেন তারা বুঝতে পারে আপনি কোথায় আছেন। চেকিন দেবার ক্ষেত্রে সেই জায়গা ছেড়ে যাবার পর দিলে বেটার। আর যদি আপনার হোটেলের বা হোস্টেলের রিসিপশনের কাউকে বিশ্বস্ত মনে হয় তবে বলে যেতে পারেন নেক্সটে কোন দিকে যাচ্ছেন। এতে করে যদি আপনি নিখোঁজ হন তবে সেই হোটেলে গিয়ে আপনার গন্তব্য কোন দিকে ছিল জানতে পারবে। আর যাবার আগে আপনার বন্ধুবান্ধব এবং ফ্যামিলিকে জানাবেন কোথায় কতদিন থাকবেন , কখন ফিরবেন এসবের একটা আনুমানিক ধারনা দিয়ে যাবেন।
এত কথা বলার মানে হল সাবধানতার মাইর নাই। আপনার সাথে খারাপ কিছু হবে তার সম্ভাবনা মাত্র ১% । আর এই অল্প সম্ভাবনা যদি সত্যি হয়ে বিপদে পড়েন তবে যেন দ্রুত আপনাকে সে বিপদ থেকে উদ্ধার করা যায়।
জরুরি সহায়তার তথ্য লিখে রাখুন
যদি কোন সমস্যায় পড়েন আপনার কাছে লোকাল পুলিশ ষ্টেশন এর বা এ্যাম্বুলেন্স , হাসপাতালের নম্বর বা নিকটবর্তী এ্যামবাসীর ঠিকানা খোঁজার সময় থাকবে না। প্যানিকড হয়ে গেলে তখন মাথাও ঠিকমত কাজ করতে না পারে। তাই এমন জরুরী পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি রাখা ভাল। আপনার ফোনের কোথাও এমারজেন্সি প্ল্যান লিখে এসব তথ্য সেভ করে রাখতে পারেন। এছাড়া ছোট কাগজের টুকরোতে লিখে মানিব্যাগের ভিতরেও রাখতে পারেন, যদি ফোনে প্রব্লেম হয় তখন লিখা কাগজ ভরসা। এভাবে যদি খারাপ কিছু ঘটে তবে আপনি খুব দ্রুত সেই অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে পারবেন।
জরুরী কাগজপত্রের ব্যাকআপ রাখুন
পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, যেকোনো ধরনের আইডি কার্ড, ভিসা, ইত্যাদির একাধিক ফটোকপি সাথে রাখুন। এছাড়া সব ডকুমেন্ট অনলাইন এ গুগল ড্রাইভে রাখুন এবং পাশাপাশি কোন বন্ধুকে ইমেইল করে রাখুন। দুর্ঘটনাবশত এসব হারিয়ে গেলে আপনার এই ফটোকপি বা অনলাইন কপি দেশে ফিরতে সাহায্য করবে। যদি পাসপোর্ট হারিয়ে ফেলেন তবে সাথে সাথে নিকটস্থ পুলিশ স্টেশনে জেনারেল ডায়েরি করুন এবং আপনার এ্যামবাসীর সাথে যোগাযোগ করুন।
সাথে ফাস্টএইড কিট রাখুন
জরুরী পরিস্থিতির জন্য সাধারণ কিছু মেডিসিন যেসব বেসিক সমস্যা সমাধানে কাজে লাগে এবং সামান্য কাটা-ছেঁড়ার জন্য ব্যান্ডেজ এবং এন্টিসেপ্টিক লিকুইড সাথে রাখবেন সবসময়য়। নতুন দেশে গিয়ে অসুখ বাধিয়ে ফেলেছেন, দ্রুত সমাধানে এই ফাস্টএইড কিট কাজে দিবে, বা এক্সিডেন্ট করেছেন এমন সময় হাসপাতাল দূরে হলে সে পর্যন্ত আপনাকে বাঁচিয়ে রাখতে ফাস্টএইড কিট এর কোন বিকল্প নেই। আরও বিস্তারিত জানতে “কেন ভ্রমণে ফাস্টএইড কিট সবসময় সাথে রাখা উচিৎ?” এই আর্টিকেল টি পড়ুন।
সাথে সেটাই নিন যা হারালে আপনার কোন আসে যায় না
ভ্রমণে মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যাওয়া উচিৎ নয়। আপনি হোটেলে হয়ত আপনার দামি কিছু রেখে এসেছেন , ঘুরতে গিয়ে আপনার নতুন জায়গা উপভোগ করার চেয়ে সেটা ঠিকমত আছে না চুরি হয়ে গেল সেটা ভাববেন। আবার সাথে দামী কিছু নিয়ে ঘুরলে সবসময় ছিনতাইকারীর কথা মাথায় ঘুরবে।
ভ্রমণে এমন কিছু নেয়া উচিৎ না যা হারালে আপনার অনেক ক্ষতি হবে। যেমন আবেগজড়িত কোন গহনা, হতে পারে বংশগত অনেক পুরানো কিছু বা ওয়েডিং রিং। সদ্য কেনা দামী কোন ক্যামেরা বা ল্যাপটপ , যা হারালে আপনার অফিস বা বাসায় ঝারি খেতে হবে। এসব জিনিষ বাসায় রেখে আসা উচিৎ, তাহলে আপনি কোনপ্রকার চিন্তা ছাড়া ঘুরতে পারবেন। কখনো ছিনতাইকারীর পাল্লায় পড়লে সহজে দিতে কষ্ট হবে না এমন জিনিষ সাথে রাখা উচিৎ। আপনার জীবনের চেয়ে কোনকিছুই মূল্যবান নয়, এটা সবসময় মনে রাখবেন।
হোটেল থেকে বের হবার সময় রুমের বাইরে ডু নট ডিস্টার্ব এর কার্ড ঝুলিয়ে যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে, তাহলে বাইরের মানুষ ধারনা করবে রুমে কেউ আছে। হোস্টেলে থাকার সময় সেফটি লকারে নিজের মূল্যবান জিনিষ রাখা উচিৎ। যেসব রুটে বাস ট্রেনে চুরি হয় সেসব জায়গাতে ব্যাগ কখনো চোখের আড়াল হতে দেয়া উচিৎ না। ঘুমানোর সময় ব্যাগ কে বালিশ হিসাবে ব্যবহার করা। কোথাও সিট ধরে রাখার জন্য ব্যাগ রেখে যাবেন না বা বাথরুমে যাবার সময় অপরিচিত কারো দায়িত্বে ব্যাগ রেখে যাবেন না।
লোকালদের উপদেশ নিন
আপনি যেখানে বেড়াতে গেছেন সেখানকার অনেক সেফটি রুলস হয়ত ইন্টারনেটে পাবেন না। তাই কোন এলাকা সেফ কোনটা বিপদজনক এ সম্পর্কে লোকালদের থেকে জেনে নেয়া ভাল। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই লোকাল মানুষজন ভাল এবং বন্ধুত্বপূর্ণ হয়, তারা আপনাকে যেকোনো বিপদ সম্পর্কে অবগত করবে। তাছাড়া অনেক হিডেন সুন্দর জায়গা থাকে , যেগুলো সম্পর্কে লোকালরা ভাল জানে। নতুন কিছু এক্সপ্লোর করার ইচ্ছা থাকলে লোকালদের উপদেশ নেয়া অনেক জরুরী।
আবার সবার থেকে উপদেশ নেয়া থেকে বিরত থাকবেন। রাস্তার পাশের ছোটখাটো দোকান, রেস্টুরেন্টের ওয়েটার বা ট্রাফিক পুলিশ ভাল সোর্স হবে। সবচেয়ে বেস্ট হল আপনার হোটেল বা হোস্টেলের রিসিপশন। হোটেলের রিসিপশন থেকে জেনে নিবেন চারপাশ সম্পর্কে, কোন জায়গা যাবার ভাড়া কত, উপায় কি কি, ভাল খাবার জায়গা কোথায়। কারো একক তথ্যের উপর নির্ভর না করে কয়েক জায়গা থেকে জেনে ক্রসম্যাচ করে নেয়া উচিৎ।
বেসিক সেলফ ডিফেন্স শেখা
সেলফ ডিফেন্স সব জায়গাতে কাজে দেয় , বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে। সেলফ ডিফেন্স শেখা মানে এই নয় যে ব্ল্যাক বেল্ট লেভেলে স্কিলড হতে হবে। বেসিক কিছু ক্লাস করলেই কাজ চালানর মত হয়ে যায়, ক্রাভ মাগা, মউয়ায় থাই এসব শিখতে পারেন।
বেসিক শিখে নেবার পর জেনে নেয়া উচিৎ কখন এটা ইউজ করবেন। আপনি একজন কে ধরাশায়ী করার ক্ষমতা রাখেন বলে ছোট খাট ঝামেলা তে এপ্লাই করলে বিপদ বাড়বে। যারা ক্রাইম করে তাদের এরিয়া থাকে লোকাল ব্যাকআপ থাকে, আর চারপাশ সম্পর্কে তাদের ধারনা বেশি থাকে। তাই অপরিচিত জায়গাতে হিরোগিরি দেখানো বোকামি। জীবন সংশয়ের মত পরিস্থিতি হলে এপ্লাই করবেন, কথা বলে ভদ্রভাবে যদি বেরিয়ে আসতে না পারেন তবে করবেন। যদি অপজিশনের কারো কাছে চাকু, পিস্তল থাকে তবে তার সাথে ঝামেলায় গিয়ে জখম হওয়া বা প্রাণ খোয়ানোর কোন মানে নেই। যা চাইবে দিয়ে চলে আসা বুদ্ধিমানের কাজ।
অপরিচিত কারো সাথে খুব বেশি তথ্য শেয়ার না করা
আপনার ট্র্যাভেল প্ল্যান নিয়ে মাত্র পরিচয় হওয়া কারো সাথে খুব বিস্তারিত শেয়ার না করায় উত্তম। রাস্তার পাশের দোকানদার বা লোকাল কেউ কোথায় থাকছেন জিজ্ঞেস করলে বলা উচিৎ নয়। কোনভাবে এড়িয়ে যাবেন অথবা অন্য জায়গার নাম বলবেন। হোস্টেলে বা হোটেলে কোন ট্র্যাভেলার এর সাথেও নেক্সট প্ল্যান বিস্তারিত শেয়ার করা উচিৎ নয়। অনেক সময় কেউ যদি জিজ্ঞেস করে এই দেশে বা জায়গাতে প্রথমবার কিনা, তবে বলবেন আগেও এসেছেন। যদি লোকাল কেউ বুঝতে পারে নতুন এসেছেন তবে তারা পিছে লাগার চেষ্টা করতে পারে।
কারো সাথে ঘুরে বেড়ানো
কারো সাথে ঘুরে বেড়ালে অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। অনেক সময় একা দেখে টাউট রা পিছে লাগে। যদি আপনি সলো ট্র্যাভেলার হন তবে চেষ্টা করবেন যেখানে বেড়াতে গেছেন সেখানে টিম বানাতে , হোস্টেলে এই সুবিধাটা বেশি। আড্ডা দিতে দিতে জেনে নিতে পারেন আপনি যেসব দেখতে চান সেদিকে কেউ যাবে কিনা, এরপর একসাথে যেতে পারেন। আরেকটা জিনিষ হল যতই একসাথে যান, আপনার দামী কোনকিছুর দায়িত্ব দিয়ে তাদের দিবেন না। যেমনঃ ব্যাগ দেখতে বলে বাথরুমে যাওয়া।
সাথে প্রয়োজনীয় টুলস নিয়ে যাওয়া
ড্রাই-ব্যাগঃ আপনি যেখানে যাচ্ছেন সেখানে যদি সমুদ্র, নদী এসব থাকে বা বর্ষার মৌসুম হয় তবে সাথে ড্রাই ব্যাগ নেয়া বুদ্ধিমানের কাজ, এটা আপনার দামী ইলেক্ট্রনিক্স জিনিসপত্র কে ঠিক রাখবে।
রেইন-কোর্ট এবং রেইন কভারঃ যেখানে যাচ্ছেন সেখানে যদি ঘন ঘন বৃষ্টি হয় বা হবার সম্ভাবনা থাকে তবে রেইন-কোর্ট এবং রেইন কভার সাথে নেয়া উচিৎ। এতে আপনার মূল্যবান জিনিসপত্র ভিজে যাওয়া থেকে রক্ষা পাবে।
প্যাডলকঃ প্যাডলক বা ছোট তালা নেয়া জরুরী, বিশেষ করে যদি আপনি ব্যাকপ্যাকিং করেন। বেশিরভাগ হোস্টেলে লকার থাকে কিন্তু নিজের তালা ব্যাবহার করতে হয়। তালা নেবার ক্ষেত্রে ভাল কম্বিনেশন লক নেয়া বেটার। কম্বিনেশন লক থাকলে আপনার চাবি নিয়ে ভাবতে হবে না।
সেফটি কেবলঃ বাস ট্রেন বা হোস্টেলে আপনার ব্যাগের অতিরিক্ত সিকিউরিটির জন্য সাথে সেফটি কেবল নিতে পারেন। ব্যাগের সাথে পেঁচিয়ে তালা মেরে দিলে আপনি কিছুটা হলেও নিশ্চিন্তে থাকতে পারবেন।
নিজের ফিলিংস কে গুরুত্ব দেয়া
খারাপ কিছু হতে পারে বা যদি মনে হয় সামথিং রং তবে সেটাকে অবশ্যই গুরুত্ব দেয়া উচিৎ। আমাদের শরীর কোন বিপদের আগে টা আঁচ করতে পারে অনেকসময়য়। যদি মনে হয় এই জায়গাটা সুবিধার মনে হচ্ছে না তবে চারপাশ একটু নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করুন। যদি বুঝতে না পারেন সমস্যা কি, তারপরেও মনে হয় ভাল ফিল করছেন না তবে সেই জায়গা থেকে বের হয়ে আসুন। আমাদের এই আগে থেকে বিপদ বুঝতে পারার ক্ষমতাই এতদিন পৃথিবীতে টিকিয়ে রেখেছে।
শেষ কথা
আপনি যদি ভ্রমণ করেন রিস্ক এড়িয়ে যেতে পারবেন না। বিপদ থেকে শতভাগ নিশ্চিত বলে কিছু হয়না, আপনি পথে নামলে কোন এক সময়ে কোন না কোন ঝামেলা বা কঠিন পরিস্থিতিতে পড়বেন। এটা সবার ক্ষেত্রেই সমান। রিস্ক এড়িয়ে যাওয়া যায়না, তবে ম্যানেজ করা যায় এবং নিজেকে নিরাপদ রাখা যায়।
আমরা বিভিন্ন দেশে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন সমস্যার ব্যাপারে মিডিয়া থেকে জানতে পারি। আর মিডিয়া বেশিরভাগ সময় নেগেটিভ ব্যাপারগুলোই বেশি হাইলাইট করে। মিডিয়া একটা দেশ বা জায়গা কে যেভাবে দেখায় আসলে তার থেকে অনেক বেশি ভিন্ন সে জায়গাগুলো। যদি মিডিয়াতে পজিটিভ নিউজ দেখাত তবে নেগেটিভ কিছু খুঁজে পেতেন না।
খারাপ ঘটনা ঘটে তবে তার পরিমাণ অনেক কম। তাই মিডিয়ার কথা বা কারো কথা না শুনে নিজে রিসার্চ করুন লোকালদের থেকে জানার চেষ্টা করুন। আর নিজেকে এমনভাবে প্রস্তুত করুন যেন, যেকোনো বাজে পরিস্থিতি থেকে নিজেকে বের করে আনতে পারেন।